Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
নিরহংকার আত্মম্ভরিতা - ১
নিরহংকার আত্মম্ভরিতা
কেনই বা থাকিবে? তিনি নিজের কাছে নিজে সর্বদাই সম্ভ্রমে নত হইয়া থাকেন। তাঁহার নিজের সহচর নিজেই। অত বড়ো সহচর দশের মধ্যে কোথায় মিলিবে! প্রতিভা যখন মুহূর্ত কালের জন্য অতিথি হইয়া এক জন কবিকে বীণা করিয়া তাঁহার তন্ত্রী হইতে সুর বাহির করিতে থাকে তখন তিনি নিজের সুর শুনিয়া নিজে মুগ্ধ হইয়া পড়েন। বাল্মীকি তাঁহার নিজের রচিত রামকে যেমন ভক্তি করিতেন এমন কোন ভক্ত করেন না এবং যতক্ষন তিনি রামের চরিত্র সৃজন করিতেছিলেন ততক্ষন তিনি নিজেই রাম হইয়াছিলেন ও তাঁহার নিজের মহান্ ভাবে নিজেই মোহিত হইয়া গিয়াছিলেন। এইরূপে যাঁহারা নিজেকে নিজেই ভক্তি করিতে পারেন, নিজের সাহচর্যে নিজে সুখ ভোগ করিতে পারেন, তাঁহাদিগকে আর দশ জনের হস্তে আত্মসমর্পণ করিতে হয় না। এক কথায় — যাঁহারা একলা থাকেন তাঁহারা আর পরের সহিত মিশিবার অবসর পান না। ইহাকেই বলে অহংকারবিবর্জিত আত্মম্ভরিতা।