সুরঙ্গমা। উৎসবে ভেঁপুর ব্যবস্থা তিনিই করে রেখেছেন।
ঠাকুরদা। তাঁর বাঁশি কারো বাজনা ছাপিয়ে ওঠে না, তা না হলে লজ্জায় আর-সকলের তান বন্ধ হয়ে যেত।
সুরঙ্গমা। দেখো ঠাকুরদা, আজ এই উৎসবের ভিতরে ভিতরে কেবলই আমার মনে হচ্ছে, রাজা আমাকে এবার দুঃখ দেবেন।
ঠাকুরদা। দুঃখ দেবেন!
সুরঙ্গমা। হাঁ ঠাকুরদা। এবার আমাকে দূরে পাঠিয়ে দেবেন, অনেক দিন কাছে আছি সে তাঁর সইছে না।
ঠাকুরদা। এবার তবে কাঁটাবনের পার থেকে তোমাকে দিয়ে পারিজাত তুলিয়ে আনাবেন। সেই দুর্গমের খবরটা আমরা যেন পাই ভাই।
সুরঙ্গমা। তোমার নাকি কোনো খবর পেতে বাকি আছে! রাজার কাজে কোন্ পথটাতেই বা তুমি না চলেছ। হঠাৎ নতুন হুকুম এলে আমাদেরই পথ খুঁজে বেড়াতে হয়।
পুষ্প ফুটে কোন্ কুঞ্জবনে
কোন্ নিভৃতে রে, কোন্ গহনে।
মাতিল আকুল দক্ষিণবায়ু
সৌরভচঞ্চল সঞ্চরণে
কোন্ নিভৃতে রে, কোন্ গহনে।
কাটিল ক্লান্ত বসন্তনিশা
বাহির-অঙ্গন-সঙ্গী-সনে।
উৎসবরাজ কোথায় বিরাজে—
কে লয়ে যাবে সে ভবনে,
কোন্ নিভৃতে রে কোন্ গহনে॥
কাঞ্চী। তোমাকে যেমন পরামর্শ দিয়েছি ঠিক সেইরকম কোরো। ভুল না হয়।
রাজবেশী। ভুল হবে না।
কাঞ্চী। করভোদ্যানের মধ্যেই রানীর প্রাসাদ।
রাজবেশী। হাঁ মহারাজ, সে আমি দেখে নিয়েছি।
কাঞ্চী। সেই উদ্যানে আগুন লাগিয়ে দেবে— তার পরে অগ্নিদাহের গোলমালের মধ্যে কার্যসিদ্ধি করতে হবে।
রাজবেশী। কিছু অন্যথা হবে না।
কাঞ্চী। দেখো হে ভণ্ডরাজ, আমার কেবলই মনে হচ্ছে, আমরা মিথ্যে ভয়ে ভয়ে চলছি, এ দেশে রাজা নেই।
রাজবেশী। সেই অরাজকতা দূর করবার জন্যেই তো আমার চেষ্টা। সাধারণ লোকের জন্যে, সত্য হোক মিথ্যে হোক একটা রাজা চাইই— নইলে অনিষ্ট ঘটে।