ওহে অন্ধকারের স্বামী।
সব বাঁধনে তোমার সাথে বন্দী করো মোরে,
ওহে, আমি বাঁধনকামী।
আমার প্রিয়, আমার শ্রেয়, আমার হে পরম,
ওহে অন্ধকারের স্বামী—
সকল ঝ’রে সকল ভ’রে আসুক সে চরম,
ওগো, মরুক-না এই আমি॥
বিদর্ভ। ওহে কাঞ্চীরাজ, তোমার অঙ্গে যে কোনো আভরণ রাখ নি।
কাঞ্চী। কোনো আশা নেই ব’লে। আভরণে যে পরাভবকে দ্বিগুণ লজ্জা দেবে।
কলিঙ্গ। যত আভরণ সমস্তই ছত্রধরের অঙ্গে দেখছি।
বিরাট। এর দ্বারা কাঞ্চীরাজ বাহ্য শোভার হীনতা প্রচার করতে চান। নিজের দেহে ওঁর পৌরুষের অভিমান অন্য কোনো আভরণ রাখতেই দেয় নি।
কোশল। ওঁর কৌশল জানি, সমস্ত আভরণধারীদের মাঝখানে উনি আভরণ-বর্জনের দ্বারাই নিজের মহিমা প্রমাণ করতে চান।
পাঞ্চাল। সেটা কি উনি ভালো করছেন। সকলেই জানে, রমণীর চোখ পতঙ্গের মতো— আভরণের দীপ্তিতে সকলের আগে ছুটে এসে পড়ে।
কলিঙ্গ। কিন্তু, আর কত বিলম্ব হবে।
কাঞ্চী। অধীর হবেন না কলিঙ্গরাজ, বিলম্বেই ফল মধুর হয়ে দেখা দেয়।
কলিঙ্গ। ফল নিশ্চয় পাব জানলে বিলম্ব সইত। ভোগের আশা অনিশ্চিত, তাই দর্শনের আশায় উৎসুক আছি।
কাঞ্চী। আপনার নবীন যৌবন, এ বয়সে বারংবার আশাকে ত্যাগ করলেও সে প্রগল্ভা নারীর মতো ফিরে ফিরে আসে— আমাদের আর সেদিন নেই।
কলিঙ্গ। কিন্তু শুভলগ্নযে উত্তীর্ণ হয়ে যায়!
কাঞ্চী। ভয় নেই, শুভগ্রহও দুর্লভ দর্শনের জন্যে অপেক্ষা করবে। যদি নির্বোধ নাও করে তবে প্রিয়দর্শনে অশুভগ্রহেরও দৃষ্টি প্রসন্ন হয়ে উঠবে।
বিদর্ভ। বিরাটরাজ, আপনি যাত্রা করেছিলেন কবে।
বিরাট। সুসময় দেখেই বেরিয়েছিলুম। দৈবজ্ঞ বলেছিল, যাত্রা সফল হবেই।