প্রথম। সে যে হেরেও হারতে চায় না।
দ্বিতীয়। শেষকালে অস্ত্রটা একেবারে তার বুকে এসে লাগল।
তৃতীয়। তার আগে সে যে পদে পদেই হারছিল তা যেন টেরও পাচ্ছিল না।
প্রথম। অন্য রাজারা তো তাকে ফেলে কে কোথায় পালাল তার ঠিক নেই।
দ্বিতীয়। কিন্তু শুনেছি, কাঞ্চীরাজ মরে নি।
তৃতীয়। না, চিকিৎসায় বেঁচে গেল, কিন্তু তার বুকের মধ্যে যে হারের চিহ্নটা আঁকা রইল সে তো আর এ জন্মে মুছবে না।
প্রথম। রাজারা কেউ পালিয়ে রক্ষা পায় নি, সবাই ধরা পড়েছে। কিন্তু বিচারটা কিরকম হল।
দ্বিতীয়। আমি শুনেছি, সকল রাজারই দণ্ড হয়েছে, কেবল কাঞ্চীর রাজাকে বিচার-কর্তা নিজের সিংহাসনের দক্ষিণপার্শ্বে বসিয়ে স্বহস্তে তার মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দিয়েছে।
তৃতীয়। এটা কিন্তু একেবারেই বোঝা গেল না।
দ্বিতীয়। বিচারটা যেন কেমন বেখাপ রকম শোনাচ্ছে।
প্রথম। তা তো বটেই। অপরাধ যা-কিছু করেছে সে তো ঐ কাঞ্চীর রাজা। এরা তো একবার লোভে, একবার ভয়ে,কেবল এগোচ্ছিল আর পিছোচ্ছিল।
তৃতীয়। এ কেমন হল। যেন বাঘটা গেল বেঁচে আর তার লেজটা গেল কাটা।
দ্বিতীয়। আমি যদি বিচারক হতুম তা হলে কাঞ্চীকে কি আর আস্ত রাখতুম। ওর আর চিহ্ন দেখাই যেত না।
তৃতীয়। কী জানি ভাই, মস্ত মস্ত বিচারকর্তা— ওদের বুদ্ধি একরকমের!
প্রথম। ওদের বুদ্ধি বলে কিছু আছে কি। ওদের সবই মর্জি। কেউ তো বলবার লোক নেই।
দ্বিতীয়। যা বলিস ভাই, আমাদের হাতে শাসনের ভার যদি পড়ত তা হলে এর চেয়ে ঢের ভালো করে চালাতে পারতুম।
তৃতীয়। সে কি একবার করে বলতে।
ঠাকুরদা। এ কী কাঞ্চীরাজ, তুমি পথে যে!
কাঞ্চী। তোমার রাজা আমায় পথেই বের করেছে।
ঠাকুরদা। ঐ তো তার স্বভাব।
কাঞ্চী। তার পরে আর নিজের দেখা নেই।
ঠাকুরদা। সেও তার এক কৌতুক।
কাঞ্চী। কিন্তু আমাকে এমন করে আর কতদিন এড়াবে। যখন কিছুতেই তাকে রাজা বলে মানতেই চাই নি তখন কোথা থেকে কালবৈশাখীর মতো এসে এক মুহূর্তে আমার ধ্বজা পতাকা ভেঙে উড়িয়ে ছারখার করে দিলে; আর, আজ তার কাছে হার