আমি তো পেয়েছি কূল অটল পর্বতে,
নিত্য যাহা তারি মাঝে করিতেছি বাস।
আবার কেন রে হোথা সন্তরণ-সাধ!
ওই অশ্রুসাগরের তরঙ্গহিল্লোলে
আবার কি দিবানিশি উঠিবি পড়িবি!

হৃদয় রে শান্ত হও, যাক সব দূরে—
যাক দূরে, যাক চলে মায়া-মরীচিকা।
এস এস অন্ধকার, প্রলয়সমুদ্রে
তপ্ত দীপ্ত দগ্ধ প্রাণ দাও ডুবাইয়া।
অকুল স্তব্ধতা এসো চারি দিকে ঘিরে,
কোলাহলে কর্ণ মোর হয়েছে বধির।
গেল, সব ডুবে গেল, হইল বিলীন,
হৃদয়ের অগ্নিজ্বালা সব নিবে গেল।

বালিকা।     পিতা, পিতা, কোথা তুমি পিতা!

সন্ন্যাসী।                  কে রে তুই!

চিনি নে, চিনি নে তোরে, কোথা হতে এলি!

বালিকা।    আমি, পিতা, চাও পিতা, দেখো পিতা, আমি!
সন্ন্যাসী।     চিনি নে, চিনি নে তোরে, ফিরে যা, ফিরে যা।

আমি কারো কেহ নই, আমি যে স্বাধীন।

বালিকা।    আমাকে যেয়ো না ফেলে, আমি নিরাশ্রয়।

শুধায়ে শুধায়ে সবে তোমারে খুঁজিয়া
বহু দূর হতে পিতা, এসেছি যে আমি।

সন্ন্যাসী।     আয় বাছা, বুকে আয়, ঢাল্‌ অশ্রুধারা!

ভেঙে যাক এ পাষাণ তোর অশ্রুস্রোতে!