Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)


রুদ্রচণ্ড - তৃতীয় দৃশ্য, ১৪
রুদ্রচণ্ড
আপনি এসেছি আমি চাঁদ কবি-কাছে,
চাঁদের কি দোষ তাহে বলো পিতা, বলো!
এসেছিনু, কিছুতেই পারি নি থাকিতে—
নিজে এসেছিনু আমি, চাঁদের কি দোষ?
রুদ্রচণ্ড।     অভাগিনী!
চাঁদ কবি।    রুদ্রচণ্ড, শোন মোর কথা।
অমিয়া।    থাম চাঁদ, কোন কথা বোলো না পিতারে,
          থাম থাম।
চাঁদ কবি।   রুদ্রচণ্ড, শোন মোর কথা!
অমিয়া।   পিতা, পিতা, এই পায়ে পড়িলাম আমি,
যাহা ইচ্ছা কর তাই এখনি— এখনি।
চেয়ো না চাঁদের পানে অমন করিয়া।
চাঁদ কবি।    দাঁড়ানু কৃপাণ এই পরশ করিয়া—
সূর্য্যদেব, সাক্ষী রহ, আমি চাঁদ কবি
আজ হতে অমিয়ার হনু পিতা মাতা।
তোর সাথে অমিয়ার সমস্ত বন্ধন
এ মুহূর্ত্ত হতে আজ ছিন্ন হয়ে গেল।
মোর অমিয়ার কেশ স্পর্শ কর যদি
রুদ্রচণ্ড, তোর দিন ফুরাইবে ভবে!
অমিয়ার মূর্ছিত হইয়া পতন
উভয়ের দ্বন্দ্বযুদ্ধ ও রুদ্রচণ্ডের পতন
রুদ্রচণ্ড।    সম্বর সম্বর অসি, থাম চাঁদ, থাম!
কি! হাসিছ বুঝি! বুঝি ভাবিতেছ মনে,
মরণেরে ভর করি আমি রুদ্রচণ্ড!
জানিস নে মরণের ব্যবসায়ী আমি!
জীবন মাগিতে হ’ল তোর কাছে আজ
শত বার মৃত্যু এই হইল আমার!
রুদ্রচণ্ড যে মুহূর্ত্তে ভিক্ষা মাগিয়াছে
রুদ্রচণ্ড সে মুহূর্ত্তে গিয়াছে মরিয়া!
আজ আমি মৃত সে রুদ্রের নাম লয়ে
কেবল শরীর তার, কহিতেছি তোরে—