বিরাট। তোমার রাজা।
কলিঙ্গ। কে।
কোশল। কে সে।
ঠাকুরদা। আপনারা সকলেই জানেন তিনি কে। তিনি এসেছেন।
বিদর্ভ। এসেছেন?
কোশল। কী তাঁর অভিপ্রায়।
ঠাকুরদা। তিনি আপনাদের আহ্বান করেছেন।
কাঞ্চী। ইস্! আহ্বান! কীভাবে আহ্বান করেছেন।
ঠাকুরদা। তাঁর আহ্বান যিনি যেভাবে গ্রহণ করতে ইচ্ছা করেন বাধা নেই— সকলপ্রকার অভ্যর্থনাই প্রস্তুত আছে।
বিরাট। তুমি কে।
ঠাকুরদা। আমি তাঁর সেনাপতিদের মধ্যে একজন।
কাঞ্চী। সেনাপতি? মিথ্যে কথা। ভয় দেখাতে এসেছ? তুমি মনে করেছ তোমার ছদ্মবেশ আমার কাছে ধরা পড়ে নি? তোমাকে বিলক্ষণ চিনি। তুমি আবার সেনাপতি!
ঠাকুরদা। আপনি আমাকে ঠিক চিনেছেন। আমার মতো অক্ষম কে আছে। তবু আমাকেই আজ তিনি সেনাপতির বেশ পরিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন— বড়ো বড়ো বীরদের ঘরে বসিয়ে রেখেছেন।
কাঞ্চী। আচ্ছা, উপযুক্ত সমারোহে আমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাব— কিন্তু উপস্থিত একটা কাজ আছে, সেটা শেষ হওয়া পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে।
ঠাকুরদা। যখন তিনি আহ্বান করেন তখন তিনি আর অপেক্ষা করেন না।
কোশল। আমি তাঁর আহ্বান স্বীকার করছি। এখনই যাব।
বিদর্ভ। কাঞ্চীরাজ, অপেক্ষা করার কথাটা ভালো ঠেকছে না। আমি চললুম।
কলিঙ্গ। আপনি প্রবীণ, আমরা আপনারই অনুসরণ করব।
পাঞ্চাল। ওহে কাঞ্চীরাজ, পিছনে চেয়ে দেখো, তোমার রাজছত্র ধুলায় লুটোচ্ছে; তোমার ছত্রধর কখন পালিয়েছে জানতেও পার নি।
কাঞ্চী। আচ্ছা, আমিও যাচ্ছি রাজদূত! কিন্তু সভায় নয়, রণক্ষেত্রে।
ঠাকুরদা। রণক্ষেত্রেই আমার প্রভুর সঙ্গে আপনার পরিচয় হবে, সেও অতি উত্তম প্রশস্ত স্থান।
বিরাট। ওহে, আমরা সকলে হয়তো কাল্পনিক ভয়ে ভঙ্গ দিচ্ছি— শেষকালে দেখছি একা কাঞ্চীরাজেরই জিত হবে।
পাঞ্চাল। তা হতে পারে। ফলটা প্রায় হাতের কাছে এসেছে, এখন ভীরুতা করে সেটা ফেলে যাওয়া ভালো হচ্ছে না।
কলিঙ্গ। কাঞ্চীর সঙ্গে যোগ দেওয়াই শ্রেয়। ও যখন এতটা সাহস করছে তখন ও কি কিছু বিবেচনা না করেই করছে।