সন্ন্যাসী। সুরসেনের বীণা শুনতে পেলেম না, কিন্তু বাবা উপনন্দ, তোমার কল্যাণে তাঁর আর-এক বীণা শুনে নিলুম, এর সুর কোনোদিন ভুলব না। বাবা, লেখো, লেখো। আমরা ততক্ষণ
শেখর। বিজয়াদিত্যকে তুমি হার মানাতে চাও, তা হলে আগে ওই অপূর্বানন্দ সন্ন্যাসীকে বশ করো। রাজা সোমপাল, তিনিও নিশ্চয় তোমার মনের কথা জানেন।
সোমপাল। কোথায় তাঁকে পাব।
শেখর। তিনি এখানেই এসেছেন আমি জানি। কাছাকাছি কোথাও আছেন।
সোমপাল। দেখো আমি লোক চিনি। তোমাকে দেখে আমার মনে হচ্ছে তোমার দ্বারা আমার কাজ উদ্ধার হবে।
শেখর। তা হতেও পারে, অসম্ভব নয়। বিজয়াদিত্যকে বশ করবার ফন্দি আমি হয়তো তোমাকে কিছু কিছু বলে দিতে পারব।
সোমপাল। দেখো, তোমাকে আমি রাজমন্ত্রী করে দেব।
শেখর। আমার যদি মন্ত্রণা চাও তাহলে আমাকে মন্ত্রী করো না। মন্ত্রণা দেওয়াই যার কাজ তার মন্ত্রণা কোনো রাজার ভালো লাগে না। বিজয়াদিত্যের সভায় যে একজন কবি আছে আমি দেখেছি –
সোমপাল। আরে ছি ছি, সে-ও আবার কবি হল! ওই তো রায়শেখরের কথা বলছ?
শেখর। হাঁ, সেই বটে।
সোমপাল। সে আমার বিদূষকেরও যোগ্য নয়।
শেখর। একেবারেই নয়।
সোমপাল। বিজয়াদিত্য যেমন রাজা তার কবিটিও তেমনি।
শেখর। তাই তো অনেকে বলে। তোমার সভায় তাকে –
সোমপাল। আমার সভায় যতক্ষণ আমি আছি ততক্ষণ কিছুতেই –
শেখর। নিশ্চয়ই। ততক্ষণ সে –
সোমপাল। সে-কথা পরে হবে। এখন সন্ন্যাসীকে তুমি খুঁজে বের করো; দেখা হলেই তাকে আমার রাজসভায় পাঠিয়ে দিয়ো, বিলম্ব কোরো না। আমি বরঞ্চ আমার দূতকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।