Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ঋণশোধ-,৩৬
ঋণশোধ
ঠাকুরদাদা। কারও পালাবার পথ কি রেখেছ? আটঘাট ঘিরে ফেলেছ যে। ঐ আসছে।
শেখরের সঙ্গে বালকগণের প্রবেশ
সকলে। সন্ন্যাসী ঠাকুর, সন্ন্যাসী ঠাকুর।
সন্ন্যাসী। (উঠিয়া দাঁড়াইয়া) এসো, বাবা, সব এসো।
সকলে। একী! এ যে রাজা। আরে পালা, পালা!
পলায়নোদ্যম
ঠাকুরদাদা। আরে পালাস নে! পালাস নে!
সন্ন্যাসী। তোমরা পালাবে কি, উনিই পালাচ্ছেন। যাও সোমপাল, সভা প্রস্তুত করো গে, আমি যাচ্ছি।
সোমপাল। যে আদেশ।
[প্রস্থান
বালকেরা। আমরা বনে পথে সব জায়গায় গেয়ে গেয়ে এসেছি, এইবার এখানে গান শেষ করি।
শেখর। হাঁ ভাই, তোরা ঠাকুরকে প্রদক্ষিণ করে করে গান গা।
সকলের গান
আমার নয়ন-ভুলানো এলে!
আমি কী হেরিলাম হৃদয় মেলে!
শিউলিতলার পাশে পাশে,
ঝরা ফুলের রাশে রাশে,
শিশির-ভেজা ঘাসে ঘাসে
অরুণরাঙা চরণ ফেলে
নয়ন-ভুলানো এলে!
আলোছায়ার আঁচলখানি
লুটিয়ে পড়ে বনে বনে,
ফুলগুলি ওই মুখে চেয়ে
কী কথা কয় মনে মনে।
তোমায় মোরা করব বরণ,
মুখের ঢাকা করো হরণ,
ওইটুকু ওই মেঘাবরণ
দু-হাত দিয়ে ফেলো ঠেলে!
আমি কী হেরিলাম হৃদয় মেলে!
শিউলিতলার পাশে পাশে,
ঝরা ফুলের রাশে রাশে,
শিশির-ভেজা ঘাসে ঘাসে
অরুণরাঙা চরণ ফেলে
নয়ন-ভুলানো এলে!
আলোছায়ার আঁচলখানি
লুটিয়ে পড়ে বনে বনে,
ফুলগুলি ওই মুখে চেয়ে
কী কথা কয় মনে মনে।
তোমায় মোরা করব বরণ,
মুখের ঢাকা করো হরণ,
ওইটুকু ওই মেঘাবরণ
দু-হাত দিয়ে ফেলো ঠেলে!