১। আপদ-বিপদের কথা কে বলতে পারে। তবে কিনা আমাদের চেষ্টার ত্রুটি হবে না।
৩। দেখো দেখো, ঐ পশ্চিম পাহাড়ে। বোধ হচ্ছে অচলেশ্বরের কাছে ওরা আগুন লাগিয়েছে। বনটা সুদ্ধ জ্বলে উঠেছে। অকারণ সর্বনাশ করতে এল কেন এরা! খিদে পেলে বাঘে খায়, ভয় পেলে সাপে তাড়া করে আসে, এদের যে নিষ্কাম পাপ, অহৈতুকী হিংসা। এরা কোন্ জাতের মানুষ, ঠাকুর।
দেবদত্ত। দৈত্য, দৈত্য। দেবতার ’পরে এদের বিশুদ্ধ বিদ্বেষ। ওরে উন্মত্ত দুর্বৃত্ত অন্ধ, তোমার মহাপাতক তোমাকে মহাপতনে নিয়ে চলল, আজ কে তোমাকে বাঁচাতে পারে। ধিক্ তোমার বন্ধুদের।
বিক্রম। কী বললে। সন্ধান পাওয়া গেল না?
চর। না মহারাজ।
বিক্রম। তবে যে চন্দ্রসেন বললেন, এইখানেই তাঁর অভিষেক হচ্ছিল। সে তো বেশিক্ষণের কথা নয়।
চর। এইমাত্র দেখলুম তাঁর ঘোড়া ফিরিয়ে আনছে। তিনি প্রবেশ করেছেন শম্ভুপ্রস্থের বনে। সেখানে গুহার পথে অদৃশ্য হতে মুহূর্তমাত্র বিলম্ব হয় না।
বিক্রম। যারা পথ জানে তাদের ধরে আনো।
চর। মহারাজ, মরে গেলেও তারা বলবে না। ওখানে সন্ধান করতে যাবে এমন সাহসও কারও নেই। ও যে ভূতে পাওয়া অরণ্য।
বিক্রম। ডেকে আনো চন্দ্রসেনকে।
কোথায় কুমারসেন?
চন্দ্রসেন। প্রজারা মিলে কোথায় তাঁকে গোপন করেছে, খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।
বিক্রম। আগুন লাগাও চারি দিকে, আপনি বেরিয়ে আসবেন।
চন্দ্রসেন। কোথায় আছেন না জেনে আগুন লাগানো হিংসার ছেলেমানুষি।
বিক্রম। সন্ধান তুমি জান, গোপন করছ।
চন্দ্রসেন। পাপে তো প্রবৃত্ত হয়েছি, তার উপরে মূঢ়তা যোগ করব, এতবড়ো অর্বাচীন আমি নই। গোপন করে তোমার কাছে নিজের বিপদ কেন ঘটাব।
বিক্রম। আমি তোমাকে বিশ্বাস করি নে।
চন্দ্রসেন। সমস্ত কাশ্মীরের লোক আমাকে অভিসম্পাত করছে, অবশেষে তোমারও মুখে এমন কথা শুনব এ আমি আশা করি নি।
বিক্রম। তুমি অল্প আগেই এখানে কুমারের কাছে এসেছিলে এ কথা সত্য কি না।
চন্দ্রসেন। তাঁকে তোমার কাছে আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিতে এসেছিলুম।
বিক্রম। সেই ছলেই তাকে জানিয়েছ আমি এসেছি। আমার পক্ষ অবলম্বনের ভান করে তাকে সতর্ক করে দিয়েছ।