Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ভগ্নহৃদয় - চতুর্থ সর্গ, ৩০
ভগ্নহৃদয়
আপনা-আপনি উঠে আঁখি মোর
সেই জানালার পানে,
আনমন হয়ে রহি দাঁড়াইয়া
কিছুখন সেইখানে।
আর কিছু নহে, এ ভাব আমার
কবির সৌন্দর্য্যতৃষা,
কলপনা-সুধা-বিভল কবির
মনের মধুর নেশা!
গোলাপের রূপ, বকুলের বাস,
পাপিয়ার বনগান,
সৌন্দর্য্যমদিরা দিবস রজনী
করিয়া করিয়া পান
শিথিল হইয়া পড়েছে হৃদয়—
নয়নে লেগেছে ঘোর—
বিকশিত রূপ বড়ো ভালো লাগে
মুগ্ধ নয়নে মোর!
সেই জানালার পানে,
আনমন হয়ে রহি দাঁড়াইয়া
কিছুখন সেইখানে।
আর কিছু নহে, এ ভাব আমার
কবির সৌন্দর্য্যতৃষা,
কলপনা-সুধা-বিভল কবির
মনের মধুর নেশা!
গোলাপের রূপ, বকুলের বাস,
পাপিয়ার বনগান,
সৌন্দর্য্যমদিরা দিবস রজনী
করিয়া করিয়া পান
শিথিল হইয়া পড়েছে হৃদয়—
নয়নে লেগেছে ঘোর—
বিকশিত রূপ বড়ো ভালো লাগে
মুগ্ধ নয়নে মোর!
তৃতীয় গান
প্রতিদিন দেখি তারে, কেন না দেখিনু আজি?
আলিঙ্গিতে গ্রীবা তার লতাগুলি চারি ধার
আছে শত বাহু তুলি শত ফুলহারে সাজি।
দূর-বন হতে ছুটি আসিয়া প্রভাতবায়
সে বয়ান না দেখিয়া শূন্য বাতায়ন দিয়া
প্রবেশি আঁধার গৃহে করিতেছে হায় হায়!
কত খন— কত খন— কত খন ভ্রমি একা,
গনিনু ফুলের দল, মাটিতে কাটিনু রেখা।
কত খন— কত খন— গেল চলি কত খন—
খনে খনে দেখি চাহি, তবু না পাইনু দেখা!
ফিরিনু আলয়মুখে, চলিনু আপন মনে,
চলিতে চলিতে ধীরে ভুলে ভুলে ফিরে ফিরে
বার বার এসে পড়ি সেই— সেই বাতায়নে!
নিরাশ-আশার মোহে চেয়ে দেখি বার বার,
আলিঙ্গিতে গ্রীবা তার লতাগুলি চারি ধার
আছে শত বাহু তুলি শত ফুলহারে সাজি।
দূর-বন হতে ছুটি আসিয়া প্রভাতবায়
সে বয়ান না দেখিয়া শূন্য বাতায়ন দিয়া
প্রবেশি আঁধার গৃহে করিতেছে হায় হায়!
কত খন— কত খন— কত খন ভ্রমি একা,
গনিনু ফুলের দল, মাটিতে কাটিনু রেখা।
কত খন— কত খন— গেল চলি কত খন—
খনে খনে দেখি চাহি, তবু না পাইনু দেখা!
ফিরিনু আলয়মুখে, চলিনু আপন মনে,
চলিতে চলিতে ধীরে ভুলে ভুলে ফিরে ফিরে
বার বার এসে পড়ি সেই— সেই বাতায়নে!
নিরাশ-আশার মোহে চেয়ে দেখি বার বার,