Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ভগ্নহৃদয় - পঞ্চম সর্গ, ৪০
ভগ্নহৃদয়
কতবার ভাবি মনে—
নলিনী আমার— আমারেই বুঝি
ভালোবাসে সংগোপনে!
সত্য হয় যদি আহা!
সে আশ্বাসবাণী, সে হাসি মধুর,
সত্য যদি হয় তাহা!
নলিনী আমার— আমারেই বুঝি
ভালোবাসে সংগোপনে!
সত্য হয় যদি আহা!
সে আশ্বাসবাণী, সে হাসি মধুর,
সত্য যদি হয় তাহা!
নীরদ। কে আমার সংশয় মিটায়!
কে বলি দিবে সে ভালো বাসে কি আমায়?
তার প্রতি দৃষ্টি হাসি তুলিছে তরঙ্গরাশি
এক মুহূর্তের শান্তি কে দিবে গো হায়!
পারি নে পারি নে আর বহিতে সংশয়ভার,
চরণে ধরিয়া তার শুধাইব গিয়া,
হৃদয়ের এ সংশয় দিব মিটাইয়া!
কিন্তু এ সংশয়ও ভালো, পাছে গো সত্যের আলো
ভাঙে এ সাধের স্বপ্ন বড়ো ভয় গনি—
হানে এ আশার শিরে দারুণ অশনি!
তার প্রতি দৃষ্টি হাসি তুলিছে তরঙ্গরাশি
এক মুহূর্তের শান্তি কে দিবে গো হায়!
পারি নে পারি নে আর বহিতে সংশয়ভার,
চরণে ধরিয়া তার শুধাইব গিয়া,
হৃদয়ের এ সংশয় দিব মিটাইয়া!
কিন্তু এ সংশয়ও ভালো, পাছে গো সত্যের আলো
ভাঙে এ সাধের স্বপ্ন বড়ো ভয় গনি—
হানে এ আশার শিরে দারুণ অশনি!
নলিনীর নিকট হইতে বিজয়ের দূরে গমন, ও নলিনীর
নিকটে গিয়া প্রমোদের গান
নিকটে গিয়া প্রমোদের গান
আঁধার শাখা উজল করি,
হরিত পাতা ঘোমটা পরি
বিজন বনে, মালতীবালা,
আছিস কেন ফুটিয়া?
শুনাতে তোরে মনের ব্যথা
শুনিতে তোর মনের কথা
পাগল হয়ে মধুপ কভু
আসে না হেথা ছুটিয়া!
মলয় তব প্রণয়-আশে
ভ্রমে না হেথা আকুল শ্বাসে,
পায় না চাঁদ দেখিতে তোর
সরমে-মাখা মুখানি!
শিয়রে তোর বসিয়া থাকি
হরিত পাতা ঘোমটা পরি
বিজন বনে, মালতীবালা,
আছিস কেন ফুটিয়া?
শুনাতে তোরে মনের ব্যথা
শুনিতে তোর মনের কথা
পাগল হয়ে মধুপ কভু
আসে না হেথা ছুটিয়া!
মলয় তব প্রণয়-আশে
ভ্রমে না হেথা আকুল শ্বাসে,
পায় না চাঁদ দেখিতে তোর
সরমে-মাখা মুখানি!
শিয়রে তোর বসিয়া থাকি