Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ভগ্নহৃদয় - নবম সর্গ, ৬৬
ভগ্নহৃদয়
জোছনা-আলোকে নয়ন মেলিতে,
হাসিপরিমলে অধর ভরিয়া
লোহিত রেণুর সিঁদুর পরিয়া
ভ্রমরে ডাকিতো হাসিতে হাসিতে—
কাছে এলে তারে দিত না বসিতে—
সহসা আজ সে হৃদয় আমার
কোথায় হারিয়েছি!
এখনো যদি গো খুঁজিয়া পাই
এখনো তাহারে কুড়ায়ে আনি—
এখনো তাহারে দলে নাই কেহ,
আমার সাধের কুসুমখানি।
এখনো, সজনি, একটি পাপড়ি
ঝরে নি তাহার জানি লো জানি।
শুধু হারায়েছে, খুঁজিয়া পাইলে
এখনি তাহারে কুড়ায়ে আনি।
ত্বরা কর্ তবে, ত্বরা কর্ তোরা,
হৃদয় খুঁজিতে যাই—
শুকাবার আগে ছিঁড়িবার আগে
হৃদয় আমার চাই!
হাসিপরিমলে অধর ভরিয়া
লোহিত রেণুর সিঁদুর পরিয়া
ভ্রমরে ডাকিতো হাসিতে হাসিতে—
কাছে এলে তারে দিত না বসিতে—
সহসা আজ সে হৃদয় আমার
কোথায় হারিয়েছি!
এখনো যদি গো খুঁজিয়া পাই
এখনো তাহারে কুড়ায়ে আনি—
এখনো তাহারে দলে নাই কেহ,
আমার সাধের কুসুমখানি।
এখনো, সজনি, একটি পাপড়ি
ঝরে নি তাহার জানি লো জানি।
শুধু হারায়েছে, খুঁজিয়া পাইলে
এখনি তাহারে কুড়ায়ে আনি।
ত্বরা কর্ তবে, ত্বরা কর্ তোরা,
হৃদয় খুঁজিতে যাই—
শুকাবার আগে ছিঁড়িবার আগে
হৃদয় আমার চাই!
সখীদের প্রতি
বিপাশাতীরের পথে, সখি, আয়
আয়, ত্বরা করে আয়!
জানিস্ কি, সখি, নদীতীরে কবি
কখন বেড়াতে যায়?
জানিস্ তো, সখি, পথের ধারেতে
একটি অশোক আছে,
বনলতা কত ফুলে ফুলে ভরা
উঠিয়াছে সেই গাছে—
সেই খানে, সখি, সেই গাছতলে
বসিয়া থাকিতে হবে।
আয়, ত্বরা করে আয়!
জানিস্ কি, সখি, নদীতীরে কবি
কখন বেড়াতে যায়?
জানিস্ তো, সখি, পথের ধারেতে
একটি অশোক আছে,
বনলতা কত ফুলে ফুলে ভরা
উঠিয়াছে সেই গাছে—
সেই খানে, সখি, সেই গাছতলে
বসিয়া থাকিতে হবে।