Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ভগ্নহৃদয় - দ্বাদশ সর্গ, ৭৯
ভগ্নহৃদয়
চাহিস নে তার পানে!
বিনোদ। একটি কথাও কহিল না মোরে,
পাশ দিয়া গেল চলি!
গর্বভারগুরু প্রতি পদক্ষেপে
মরমে মরমে দলি।
কেন গো, কেন গো; কি আমি করেছি—
কিছু তো না পড়ে মনে!
কহেছে তো কথা প্রমোদের সাথে,
অশোক নীরদ-সনে!
গেল হে হৃদয়— কত দিন আর
রবে সে এমন করি
কখনো উঠিয়া আকাশের ’পরে
কখনো পাতালে পড়ি!
গর্বভারগুরু প্রতি পদক্ষেপে
মরমে মরমে দলি।
কেন গো, কেন গো; কি আমি করেছি—
কিছু তো না পড়ে মনে!
কহেছে তো কথা প্রমোদের সাথে,
অশোক নীরদ-সনে!
গেল হে হৃদয়— কত দিন আর
রবে সে এমন করি
কখনো উঠিয়া আকাশের ’পরে
কখনো পাতালে পড়ি!
অনিল। [দূর হইতে দেখিয়া]
না জানি কিসের জ্যোতি নয়নে আছে গো বালা!
যে দিকে চাহিয়া দেখ সে দিক করিছ আলা।
অন্ধকারভেদী এক হাসিময় তারা-সম
প্রাণের ভিতর-পানে চাহিয়া মম!
ফিরায়ে লইনু মুখ, তবুও কেন গো দেখি
চাহিছে হৃদয়-পানে দুটি হাসিমাখা আঁখি!
আঁখি মুদি, তবু কেন হেরি গো প্রাণের কাছে
দুটি আঁখি চেয়ে আছে এক দৃষ্টে চেয়ে আছে!
হেথা না পাইবি ঠাঁই— দূর হ তুই রে তারা—
চন্দ্রমা জোছনা করি এ হৃদি রেখেছে ভরি,
তুই তারা সে আলোকে হইবি আপনাহারা!
দূর হ রে— দূর হ রে— দূর হ রে ক্ষুদ্র তারা!
কিন্তু কি মধুর মুখ ভাবভরে ঢলঢল!
কোমলকুসুমসম সমীরণে টলমল!
দেখি নি এহেন মুখ সুমধুর ভাবময়!
কেন? ললিতার মুখ এ হতে কি ভালো নয়?
যে দিকে চাহিয়া দেখ সে দিক করিছ আলা।
অন্ধকারভেদী এক হাসিময় তারা-সম
প্রাণের ভিতর-পানে চাহিয়া মম!
ফিরায়ে লইনু মুখ, তবুও কেন গো দেখি
চাহিছে হৃদয়-পানে দুটি হাসিমাখা আঁখি!
আঁখি মুদি, তবু কেন হেরি গো প্রাণের কাছে
দুটি আঁখি চেয়ে আছে এক দৃষ্টে চেয়ে আছে!
হেথা না পাইবি ঠাঁই— দূর হ তুই রে তারা—
চন্দ্রমা জোছনা করি এ হৃদি রেখেছে ভরি,
তুই তারা সে আলোকে হইবি আপনাহারা!
দূর হ রে— দূর হ রে— দূর হ রে ক্ষুদ্র তারা!
কিন্তু কি মধুর মুখ ভাবভরে ঢলঢল!
কোমলকুসুমসম সমীরণে টলমল!
দেখি নি এহেন মুখ সুমধুর ভাবময়!
কেন? ললিতার মুখ এ হতে কি ভালো নয়?
আহা সে মধুর বড়ো ললিতার মুখখানি—
আঁখি কত কথা কয়, মুখেতে নাইক বাণী,
আঁখি কত কথা কয়, মুখেতে নাইক বাণী,