Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ভগ্নহৃদয় - দ্বাদশ সর্গ, ৮২
ভগ্নহৃদয়
এত কেন সাধ বল্ দেখি, মন,
পর-ঘরে যেতে যখন তখন—
সেথা কি রে তুই আদর পাস্?
বল্ তো কত-না সহিস যাতনা?
দিবানিশি কত সহিস লাঞ্ছনা?
তবু কি রে তোর মিটে নি আশ?
পর-ঘরে যেতে যখন তখন—
সেথা কি রে তুই আদর পাস্?
বল্ তো কত-না সহিস যাতনা?
দিবানিশি কত সহিস লাঞ্ছনা?
তবু কি রে তোর মিটে নি আশ?
আয়, ফিরে আয়, মন, ফিরে আয়—
দোঁহে এক সাথে করিব বাস!
অনাদর আর হবে না সহিতে,
দিবস রজনী পাষাণ বহিতে,
মরমে দহিতে, মুখে না কহিতে,
ফেলিতে দুখের শ্বাস!
শুনিলি নে কথা? আসিলি নে হেথা?
ফিরিলি নে একবার?
সখি লো, দুরন্ত হৃদয়ের সাথে
পেয়ে উঠি নে তো আর!
“নয় রে সুখের খেলা ভালোবাসা!”
কত বুঝালেম তায়—
হেরিয়া চিকণ সোনার শিকল
খেলাইতে যায় হৃদয় পাগল,
খেলাতে খেলাতে না জেনে না শুনে
জড়ায় নিজের পায়!
বাহিরিতে চায়, বাহিরিতে নারে,
করে শেষে হায়-হায়!
শিকল ছিঁড়িয়ে এসেছে ক’বার,
আবার কেন রে যায়?
চরণে শিকল বাঁধিয়া কাঁদিতে
না জানি কি সুখ পায়!
তিলেক রহে না আমার কাছেতে
যতই কাঁদিয়া মরি,
এমন দুরন্ত হৃদয় লইয়া,
সজনি, বল্ কি করি?
দোঁহে এক সাথে করিব বাস!
অনাদর আর হবে না সহিতে,
দিবস রজনী পাষাণ বহিতে,
মরমে দহিতে, মুখে না কহিতে,
ফেলিতে দুখের শ্বাস!
শুনিলি নে কথা? আসিলি নে হেথা?
ফিরিলি নে একবার?
সখি লো, দুরন্ত হৃদয়ের সাথে
পেয়ে উঠি নে তো আর!
“নয় রে সুখের খেলা ভালোবাসা!”
কত বুঝালেম তায়—
হেরিয়া চিকণ সোনার শিকল
খেলাইতে যায় হৃদয় পাগল,
খেলাতে খেলাতে না জেনে না শুনে
জড়ায় নিজের পায়!
বাহিরিতে চায়, বাহিরিতে নারে,
করে শেষে হায়-হায়!
শিকল ছিঁড়িয়ে এসেছে ক’বার,
আবার কেন রে যায়?
চরণে শিকল বাঁধিয়া কাঁদিতে
না জানি কি সুখ পায়!
তিলেক রহে না আমার কাছেতে
যতই কাঁদিয়া মরি,
এমন দুরন্ত হৃদয় লইয়া,
সজনি, বল্ কি করি?