Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ভগ্নহৃদয় - ঊনবিংশ সর্গ, ১০৩
ভগ্নহৃদয়
তা হলে ঘুচিয়া যাবে হৃদয়ের ভার।
ত্বরা করে চল্ তবে ললিতা আমার!
ত্বরা করে চল্ তবে ললিতা আমার!
কবির প্রবেশ
চপলা। [কবির প্রতি]
চল, কবি, মুরলার কাছে—
বড়ো সে মনের দুঃখে আছে!
তুমি, কবি, তারে দেখো— সদা কাছে কাছে রেখো,
তুমি তারে ভালো ক’রে করিও যতন!
তুমি ছাড়া কে তাহার আছে বা স্বজন!
বড়ো সে মনের দুঃখে আছে!
তুমি, কবি, তারে দেখো— সদা কাছে কাছে রেখো,
তুমি তারে ভালো ক’রে করিও যতন!
তুমি ছাড়া কে তাহার আছে বা স্বজন!
কবি। মুরলার মুখ দেখে প্রাণে বড়ো বাজে—
কিসের যে দুঃখ তার শুধায়েছি কতবার,
কিছুতে আমার কাছে প্রকাশে না লাজে!
কত দিন হতে মোরা বাঁধা এক ডোরে—
যাহা কিছু থাকে কথা, যাহা কিছু পাই ব্যথ্যা,
দুজনে তখনি তাহা বলি দুজনেরে।
কিছু দিন হতে একি হল মুরলার,
আমারে মনের কথা বলে না সে আর!
মাঝে মাঝে ভাবি তাই— বড়ো মনে ব্যথা পাই—
বুঝি মোর ’পরে নাই প্রণয় তাহার!
এত কথা বলি তারে এত ভালোবাসি,
সে কেন আমারে কিছু কহে না প্রকাশি!
কিছুতে আমার কাছে প্রকাশে না লাজে!
কত দিন হতে মোরা বাঁধা এক ডোরে—
যাহা কিছু থাকে কথা, যাহা কিছু পাই ব্যথ্যা,
দুজনে তখনি তাহা বলি দুজনেরে।
কিছু দিন হতে একি হল মুরলার,
আমারে মনের কথা বলে না সে আর!
মাঝে মাঝে ভাবি তাই— বড়ো মনে ব্যথা পাই—
বুঝি মোর ’পরে নাই প্রণয় তাহার!
এত কথা বলি তারে এত ভালোবাসি,
সে কেন আমারে কিছু কহে না প্রকাশি!
ঊনবিংশ সর্গ
অনিল
উহু, কি না করিলাম হৃদয়ের সাথ!
ঘোর উন্মত্তের মত সবলে যুঝিনু কত,
অশান্তির বিপ্লাবনে গেছে দিন রাত।
নিশীথে গিয়েছি ছুটে দারুণ অধীর—
নয়নেতে নিদ্রা নাই, চোখে না দেখিতে পাই,
ঘোর উন্মত্তের মত সবলে যুঝিনু কত,
অশান্তির বিপ্লাবনে গেছে দিন রাত।
নিশীথে গিয়েছি ছুটে দারুণ অধীর—
নয়নেতে নিদ্রা নাই, চোখে না দেখিতে পাই,