Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ভগ্নহৃদয় -একত্রিংশ সর্গ, ১২৯
ভগ্নহৃদয়
পদতলে ফুল তুলে দিত সবে আনি—
গরবে উন্মত্তহিয়া আপনারে বিসরিয়া
ভাবিতাম আমি বুঝি হৃদয়ের রানী
চারি দিকে আমার হৃদয়-রাজধানী!
দিবস সায়াহ্ন হল, বসন্ত ফুরায়,
খেলাবার দিন যবে অবসান-প্রায়,
মাথায় পড়িল বাজ— সহসা দেখিনু আজ
আমি কেহ নই, শুধু খেলাবার রানী—
বালুকার ’পরে গড়া খেলা-রাজধানী!
নিতান্ত ভিখারী আজি দীনহীন বেশে সাজি
দুয়ারে দুয়ারে ভ্রমি আশ্রয়ের তরে,
সবাই ফিরায় মুখ উপেক্ষার ভরে।
খেলা যবে ফুরাইল কে কোথায় চলে গেল—
তাই বড়ো সাধ যায় ভালোবাসিবারে।
সখি, তোরা বল্ দেখি ভালোবাসি কারে?
গরবে উন্মত্তহিয়া আপনারে বিসরিয়া
ভাবিতাম আমি বুঝি হৃদয়ের রানী
চারি দিকে আমার হৃদয়-রাজধানী!
দিবস সায়াহ্ন হল, বসন্ত ফুরায়,
খেলাবার দিন যবে অবসান-প্রায়,
মাথায় পড়িল বাজ— সহসা দেখিনু আজ
আমি কেহ নই, শুধু খেলাবার রানী—
বালুকার ’পরে গড়া খেলা-রাজধানী!
নিতান্ত ভিখারী আজি দীনহীন বেশে সাজি
দুয়ারে দুয়ারে ভ্রমি আশ্রয়ের তরে,
সবাই ফিরায় মুখ উপেক্ষার ভরে।
খেলা যবে ফুরাইল কে কোথায় চলে গেল—
তাই বড়ো সাধ যায় ভালোবাসিবারে।
সখি, তোরা বল্ দেখি ভালোবাসি কারে?
একত্রিংশ সর্গ
অনিল ও কবি
অনিল। একবার এসো তুমি, চল গো হোথায়—
দেখে যাও কী হৃদয় দ’লেছ দু-পায়!
যখন কোরক সবে, খোলে নাই আঁখি,
তখন হৃদয়ে তার বসিয়া একাকী
দিনরাত— দিনরাত বিষদন্ত বিঁধি
আহা সেই সুকুমার কিশলয়হৃদি
বিন্দু বিন্দু রক্ত তার করেছ শোষণ!
কথাটি সে বলে নাই— মুখটি সে তুলে নাই,
হৃদয়ঘাতীরে হৃদে দিয়েছে আসন!
আজ সে যৌবনে যবে খুলিল নয়ন—
দেখিল হৃদয়ে তার নাই রক্তলেশ,
যৌবনের পরিমল হয়েছে নিঃশেষ!
কথাটি সে বলিল না— মুখটি সে তুলিল না,
যখন কোরক সবে, খোলে নাই আঁখি,
তখন হৃদয়ে তার বসিয়া একাকী
দিনরাত— দিনরাত বিষদন্ত বিঁধি
আহা সেই সুকুমার কিশলয়হৃদি
বিন্দু বিন্দু রক্ত তার করেছ শোষণ!
কথাটি সে বলে নাই— মুখটি সে তুলে নাই,
হৃদয়ঘাতীরে হৃদে দিয়েছে আসন!
আজ সে যৌবনে যবে খুলিল নয়ন—
দেখিল হৃদয়ে তার নাই রক্তলেশ,
যৌবনের পরিমল হয়েছে নিঃশেষ!
কথাটি সে বলিল না— মুখটি সে তুলিল না,