Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
নৃত্যনাট্য চণ্ডালিকা - দ্বিতীয় দৃশ্য, ১১
নৃত্যনাট্য চণ্ডালিকা
আর সে যে চাইল না জল।
আমার হৃদয় তাই হল মরুভূমি,
শুকিয়ে গেল তার রস—
সে যে চাইল না জল।
আমার হৃদয় তাই হল মরুভূমি,
শুকিয়ে গেল তার রস—
সে যে চাইল না জল।
—
চক্ষে আমার তৃষ্ণা,
তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে।
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন,
সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে।
ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায় হাওয়ায়,
মনকে সুদূর শূন্যে ধাওয়ায়—
অবগুণ্ঠন যায় যে উড়ে।
যে ফুল কানন করত আলো,
কালো হয়ে সে শুকালো।
ঝরনারে কে দিল বাধা—
নিষ্ঠুর পাষাণে বাঁধা
দুঃখের শিখরচূড়ে॥
তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে।
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন,
সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে।
ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায় হাওয়ায়,
মনকে সুদূর শূন্যে ধাওয়ায়—
অবগুণ্ঠন যায় যে উড়ে।
যে ফুল কানন করত আলো,
কালো হয়ে সে শুকালো।
ঝরনারে কে দিল বাধা—
নিষ্ঠুর পাষাণে বাঁধা
দুঃখের শিখরচূড়ে॥
মা। বাছা, সহজ ক’রে বল আমাকে
মন কাকে তোর চায়।
বেছে নিস মনের মতন বর—
রয়েছে তো অনেক আপন জন।
আকাশের চাঁদের পানে
হাত বাড়াস নে।
বেছে নিস মনের মতন বর—
রয়েছে তো অনেক আপন জন।
আকাশের চাঁদের পানে
হাত বাড়াস নে।
প্রকৃতি। আমি চাই তাঁরে
আমারে দিলেন যিনি সেবিকার সম্মান,
ঝড়ে-পড়া ধুতরো ফুল
ধুলো হতে তুলে নিলেন যিনি দক্ষিণ করে।
ওগো প্রভু, ওগো প্রভু
সেই ফুলে মালা গাঁথো,
পরো পরো আপন গলায়,
ব্যর্থ হতে তারে দিয়ো না দিয়ো না।
ঝড়ে-পড়া ধুতরো ফুল
ধুলো হতে তুলে নিলেন যিনি দক্ষিণ করে।
ওগো প্রভু, ওগো প্রভু
সেই ফুলে মালা গাঁথো,
পরো পরো আপন গলায়,
ব্যর্থ হতে তারে দিয়ো না দিয়ো না।