আদিত্য। (দাঁড়িয়ে উঠে) এবার তবে আমি রাগ করি?
নীরজা। হাঁ, করো, অন্যায় করেছি, কিন্তু মাপ কোরো তার পরে।
আদিত্য। (দরজার কাছে এসে) সরলা! সরলা!
(সরলাকে বিরক্তভাবে) নীরুকে ওষুধ দাও নি আজ, সারাদিন কিছু খেতেও দেওয়া হয় নি?
নীরজা। ওকে বক্ছ কেন? ওর দোষ কী? আমিই দুষ্টুমি করে খাই নি। আমাকে বকো-না। সরলা, তুমি যাও। মিছে কেন দাঁড়িয়ে বকুনি খাবে।
আদিত্য। যাবে কি, ওষুধ বের করে দিক, হরলিক্স মিল্ক তৈরি করে আনুক।
নীরজা। আহা, সমস্ত দিন ওকে মালীর কাজে খাটিয়ে মারো তার উপরে আবার নার্সের কাজ কেন! একটু দয়া হয় না তোমার মনে? আয়াকে ডাকো-না।
আদিত্য। আয়া কি ঠিকমত পারবে এ-সব কাজ?
নীরজা। ভারি তো কাজ, খুব পারবে। আরো ভালোই পারবে।
আদিত্য। কিন্তু—
নীরজা। কিন্তু আবার কিসের। আয়া! আয়া!
আদিত্য। অত উত্তেজিত হোয়ো না। একটা বিপদ ঘটবে দেখছি।
সরলা। আমি আয়াকে ডেকে দিচ্ছি।
আয়া এসে ওষুধ পথ্য করাল
আদিত্য। (আয়াকে) সরলাদিদিকে ডেকে দাও।
নীরজা। কথায় কথায় কেবলই সরলাদিদি, বেচারাকে তুমি অস্থির করে তুলবে দেখছি।
আদিত্য। কাজের কথা আছে।
নীরজা। থাক্-না এখন কাজের কথা।
আদিত্য। বেশিক্ষণ লাগবে না।
নীরজা। সরলা মেয়েমানুষ, ওর সঙ্গে এত কাজের কথা কিসের? তার চেয়ে হলা মালীকে ডাকো -না।
আদিত্য। তোমাকে বিয়ে করবার পর থেকে একটা কথা আবিষ্কার করেছি যে, মেয়েরাই কজের, পুরুষরা হাড়ে অকেজো। আমরা কাজ করি দায়ে পড়ে, তোমরা কাজ করো প্রাণের উৎসাহে। এই সম্বন্ধে একটা থীসিস্ লিখব মনে করেছি। আমার ডায়রি থেকে বিস্তর উদাহরণ পাওয়া যাবে।
নীরজা। সেই মেয়েকেই আজ তার প্রাণের কাজ থেকে বঞ্চিত করেছে যে বিধাতা, তাকে কী বলে নিন্দে করব? ভূমিকম্পে হুড়মুড় করে আমার কাজের চূড়া পড়েছে ভেঙে, তাই তো পোড়ো বাড়িতে ভূতের বাসা হল।