নীরজা। তুমি আমার চেয়ে ওকে ভালোবাস বলে। এতদিন সে কথা লুকিয়ে রেখেছিলে।
আদিত্য। (বিহ্বলকণ্ঠে) নীরু, দশ বৎসর তুমি আমাকে জেনেছ। সুখে দুঃখে নানা অবস্থায় নানা কাজে, তার পরেও তুমি যদি এমন কথা আজ বলতে পারো তবে আমি কোনো জবাব করব না। চললুম কাছে থাকলে তোমার শরীর খারাপ হবে। ফর্নারির পাশে যে জাপানী ঘর আছে সেইখানে থাকব; যখন আমাকে দরকার হবে ডেকে পাঠিয়ো।
রমেন। আসতে পারি কি?
সরলা। এসো।
(ব্যস্ত হয়ে) কোথায় বসলে রমেন দাদা, উপরে এসো।
রমেন। জানো, দেবীদের বর্ণনা আরম্ভ পদপল্লব থেকে। পাশে জায়গা থাকে তো পরে বসব। দাও তোমার হাতখানি, অভ্যর্থনা শুরু করি বিলিতি মতে।
সম্রাজ্ঞীর অভিবাদন গ্রহণ করো।
দিলে ওর কপালে মাখিয়ে
সরলা। এ আবার কী?
রমেন। জানো না আজ দোলপূর্ণিমা? তোমাদের গাছে গাছে ডালে ডালে রঙের ছড়াছড়ি। বসন্তে মানুষের গায়ে তো রঙ লাগে না, লাগে তার মনে। সেই রঙটাকে বাইরে প্রকাশ করতে হবে; নইলে, বনলক্ষ্মী, অশোকবনে তুমি নির্বাসিত হয়ে থাকবে।
সরলা। তোমার সঙ্গে কথার খেলা করি এমন ওস্তাদী নেই আমার।
রমেন। কথার দরকার কিসের? পুরুষপাখিই গান করে, তোমরা মেয়েপাখি চুপ করে শুনলেই উত্তর দেওয়া হল। এইবার বসতে দাও পাশে।