Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
চিত্রাঙ্গদা - ৫, ২৪
চিত্রাঙ্গদা
সন্ধি হোক অধরের সুখসম্মিলনে
ক্ষান্ত করি মিথ্যা অসন্তোষ। বাহুবন্ধে
এসো বন্দী করি দোঁহে দোঁহা, প্রণয়ের
সুধাময় চিরপরাজয়ে।
ক্ষান্ত করি মিথ্যা অসন্তোষ। বাহুবন্ধে
এসো বন্দী করি দোঁহে দোঁহা, প্রণয়ের
সুধাময় চিরপরাজয়ে।
অর্জুন। ওই শোনো
প্রিয়তমে, বনান্তের দূর লোকালয়ে
আরতির শান্তিশঙ্খ উঠিল বাজিয়া।
আরতির শান্তিশঙ্খ উঠিল বাজিয়া।
৫
মদন ও বসন্ত
মদন। আমি পঞ্চশর, সখা; এক শরে হাসি,
অশ্রু এক শরে; এক শরে আশা, অন্য
শরে ভয়, এক শরে বিরহ-মিলন-
আশা-ভয়-দুঃখ-সুখ এক নিমেষেই।
শরে ভয়, এক শরে বিরহ-মিলন-
আশা-ভয়-দুঃখ-সুখ এক নিমেষেই।
বসন্ত। শ্রান্ত আমি, ক্ষান্ত দাও সখা! হে অনঙ্গ,
সাঙ্গ করো রণরঙ্গ তব; রাত্রিদিন
সচেতন থেকে, তব হুতাশনে আর
কতকাল করিব ব্যজন। মাঝে মাঝে
নিদ্রা আসে চোখে, নত হয়ে পড়ে পাখা,
ভস্মে ম্লান হয়ে আসে তপ্তদীপ্তিরাশি।
চমকিয়া জেগে, আবার নূতন শ্বাসে
জাগাইয়া তুলি তার নব-উজ্জ্বলতা।
এবার বিদায় দাও সখা।
সচেতন থেকে, তব হুতাশনে আর
কতকাল করিব ব্যজন। মাঝে মাঝে
নিদ্রা আসে চোখে, নত হয়ে পড়ে পাখা,
ভস্মে ম্লান হয়ে আসে তপ্তদীপ্তিরাশি।
চমকিয়া জেগে, আবার নূতন শ্বাসে
জাগাইয়া তুলি তার নব-উজ্জ্বলতা।
এবার বিদায় দাও সখা।
মদন। জানি তুমি
অনন্ত অস্থির, চিরশিশু। চিরদিন
বন্ধনবিহীন হয়ে দ্যুলোকে ভূলোকে
করিতেছ খেলা। একান্ত যতনে যারে
তুলিছ সুন্দর করি বহুকাল ধরে
নিমেষে যেতেছ তারে ফেলি ধূলিতলে
পিছে না ফিরিয়া। আর বেশি দিন নাই;
আনন্দচঞ্চল দিনগুলি, লঘুবেগে,
বন্ধনবিহীন হয়ে দ্যুলোকে ভূলোকে
করিতেছ খেলা। একান্ত যতনে যারে
তুলিছ সুন্দর করি বহুকাল ধরে
নিমেষে যেতেছ তারে ফেলি ধূলিতলে
পিছে না ফিরিয়া। আর বেশি দিন নাই;
আনন্দচঞ্চল দিনগুলি, লঘুবেগে,