চন্দ্রকান্ত। বাগবাজারের চৌধুরীদের মেয়ে কাদম্বিনী। আমার স্ত্রীর একটি বন্ধু।
নিমাই। ওর স্বামী বোধ করি স্বাধীনতাওয়ালা?
চন্দ্রকান্ত। ওঁর আবার স্বামী কোথায়।
নিমাই। মরেছে বুঝি? আপদ গেছে। কিন্তু বিধবার মতো বেশ নয় তো—
চন্দ্রকান্ত। বিধবা নয় হে— কুমারী। যদি হঠাৎ স্নায়ুর ব্যামো ঘটে থাকে তো বলো,ঘটকালি করি।
নিমাই। তেমন স্নায়ু হলে এতদিনে গলায় দড়ি দিয়ে মরতুম।
চন্দ্রকান্ত। তা হলে চলো একবার বিনোদকে দেখে আসা যাক। তার বিশ্বাস সে ভারি একটা অসমসাহসিক কাজ করতে প্রবৃত্ত হয়েছে,তাই একেবারে সপ্তমে চড়ে রয়েছে—যেন তার পূর্বে বঙ্গদেশে বিবাহ আর কেউ করে নি!
নিমাই। মেয়েমানুষকে বিয়ে করতে হবে তার আবার ভয় কিসের। এমন যদি হত, না দেখে বিয়ে করতে গিয়ে দৈবাৎ একটা পুরুষমানুষ বেরিয়ে পড়ত তা হলে বটে!
চন্দ্রকান্ত। বল কী নিমাই? বিধাতার আশীর্বাদে জন্মালুম পুরুষমানুষ হয়ে, কী জানি কার শাপে বিয়ে করতে গেলুম মেয়েমানুষকে, এ কি কম সাহসের কথা।
চন্দ্রকান্ত। আরে, আরে, এস নলিনদা। ভালো তো?
নলিনাক্ষ। (নিমাইয়ের প্রতি) বিনোদ কোথায়।
চন্দ্রকান্ত। বিনোদ যেখানেই থাক্, আপাতত আমার মতো এতবড়ো লোকটা কি তোমার নলিনাক্ষগোচর হচ্ছে না। তোমার ভাব দেখে হঠাৎ ভয় হয়, তবে আমি হয়তো বা নেই।
নলিনাক্ষ। আমি বিনোদকে খুঁজছি।
চন্দ্রকান্ত। ইচ্ছা করলে অমনি ইতিমধ্যে আমার সঙ্গেও দুটো-একটা কথা কয়ে নিতে পারো। তা চলো, আমরাও তার কাছে যাচ্ছি।
নলিনাক্ষ। তা হলে তোমরা এগোও। আমি পরে যাব এখন।