ভয়ে ভয়ে কেবল তোমায় এড়াই –
যা-কিছু আছে সব কাড়ো কাড়ো।
দেখ বাবা, আমি মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে বোঝা-পড়া করতে চলেছি। বলতে চাই, ‘মার আমায় বাজে কি না তুমি নিজে বাজিয়ে নাও।’ যে ডরে কিংবা ডর দেখায় তার বোঝা ঘাড়ে নিয়ে এগোতে পারব না।
এবার যা করবার তা সারো, সারো—
আমিই হারি, কিংবা তুমিই হার।
হাটে ঘাটে বাটে করি খেলা
কেবল হেসে খেলে গেছে বেলা—
দেখি কেমনে কাঁদাতে পার।
সকলে। শাবাশ, ঠাকুর,তাই সই—
২। কিন্তু তুমি কোথায় চলেছো বলো তো?
ধনঞ্জয়। রাজার উৎসবে।
৩। ঠাকুর, রাজার পক্ষে যেটা উৎসব তোমার পক্ষে সেটা কী দাঁড়ায় বলা যায় কি? সেখানে কী করতে যাবে?
ধনঞ্জয়। রাজসভায় নাম রেখে আসব।
৪। রাজা তোমাকে একবার হাতের কাছে পেলে— না, না, সে হবে না।
ধনঞ্জয়। হবে না কী রে? খুব হবে, পেট ভরে হবে।
১। রাজাকে ভয় কর না তুমি, কিন্তু আমাদের ভয় লাগে।
ধনঞ্জয়। তোরা যে মনে মনে মারতে চাস তাই ভয় করিস, আমি মারতে চাই নে তাই ভয় করি নে। যার হিংসা আছে ভয় তাকে কামড়ে লেগে থাকে।
২। আচ্ছা, আমরাও তোমার সঙ্গে যাব।
৩। রাজার কাছে দররার করব।
ধনঞ্জয়। কী চাইবি রে?
৩। চাইবার তো আছে ঢের, দেয় তবে তো?
ধনঞ্জয়। রাজত্ব চাইবি নে?
৩। ঠাট্টা করছ ঠাকুর?
ধনঞ্জয়। ঠাট্টা কেন করব? এক পায়ে চলার মতো কি দুঃখ আছে? রাজত্ব একলা যদি রাজারই হয়, প্রজার না হয়, তা হলে সেই খোঁড়া রাজত্বের লাফানি দেখে তোরা চমকে উঠতে পারিস কিন্তু দেবতার চোখে জল আসে। ওরে রাজার খাতিরেই রাজত্ব দাবি করতে হবে।
২। যখন তাড়া লাগবে?
ধনঞ্জয়। রাজদরবারের উপরতলার মানুষ যখন নালিশ মঞ্জুর করেন, তখন রাজার তাড়া রাজাকেই তেড়ে আসে।