উ ৩। ক্ষত্রিয়ের অস্ত্রে বৈশ্যের যন্ত্রে যে মিলিয়েছে, জয় সেই যন্ত্ররাজ বিভূতির জয়।
উ ১। ও ভাই, ঐ-যে দেখি শিবতরাইয়ের মানুষ।
উ ২। কী করে বুঝলি?
উ ১। কান-ঢাকা টুপি দেখছিস নে? কীরকম অদ্ভুত দেখতে! যেন উপর থেকে থাবড়া মেরে হঠাৎ কে ওদের বাড় বন্ধ করে দিয়েছে।
উ ২। আচ্ছা, এত দেশ থাকতে ওরা কান-ঢাকা টুপি পরে কেন? ওরা কি ভাবে কানটা বিধাতার মতিভ্রম?
উ ১। কানের উপর বাঁধ বেঁধেছে, বুদ্ধি পাছে বেরিয়ে যায়।
উ ৩। তাই? না, ভুলক্রমে বুদ্ধি পাছে ভিতরে ঢুকে পড়ে।
উ ১। পাছে উত্তরকূটের কানমলার ভূত ওদের কানদুটোকে পেয়ে বসে। (হাস্য) ওরে শিবতরাইয়ের অজবুগের দল, সাড়া নেই, শব্দ নেই— হয়েছে কী রে?
উ ৩। জানিস নে আজ আমাদের বড়ো দিন। বল্ যন্ত্ররাজ বিভূতির জয়!
উ ১। চুপ করে রইলি যে? গলা বুজে গেছে? টুঁটি চেপে না ধরলে আওয়াজ বেরোবে না বুঝি? বল্ যন্ত্ররাজ বিভূতির জয়!
গণেশ। কেন বিভূতির জয়? কী করেছে সে?
উ ১। বলে কী? কী করেছে? এত বড়ো খবরটা এখনও পৌঁছয় নি? কান-ঢাকা টুপির গুণ দেখলি তো?
উ ৩। তোদের পিপাসার জল যে তার হাতে— সে দয়া না করলে অনাবৃষ্টির ব্যাঙগুলোর মতো শুকিয়ে মরে যাবি।
শি ২। পিপাসার জল বিভূতির হাতে? হঠাৎ সে দেবতা হয়ে উঠল নাকি?
উ ২। দেবতাকে ছুটি দিয়ে দেবতার কাজ নিজেই চালিয়ে নেবে।
শি ১। দেবতার কাজ! তার একটা নমুনা দেখি তো।
উ ১। ঐ-যে মুক্তধারার বাঁধ।
উ ১। এটা কি তোরা ঠাট্টা ঠাউরেছিস?
গণেশ। ঠাট্টা নয়? মুক্তধারা বাঁধবে? ভৈরব স্বহস্তে যা দিয়েছেন, তোমাদের কামারের ছেলে তাই কাড়বে?
উ ১। স্বচক্ষে দেখ্-না ওই আকাশে।
শি ১। বাপ রে! ওটা কী রে?
শি ২। যেন মস্ত একটা লোহার ফড়িং,আকাশে লাফ মারতে যাচ্ছে।
উ ১। ওই ফড়িঙের ঠ্যাং দিয়ে তোমাদের জল আটকেছে।
গণেশ। রেখে দাও সব বাজে কথা। কোন্ দিন বলবে ওই ফড়িঙের ডানায় বসে তোমাদের কামারের পো চাঁদ ধরতে বেরিয়েছে।