ধনঞ্জয়। বেশ হয়েছে, বেশ হয়েছে-একবার খুব করে নেচে নে।
আরো প্রভু, আরো আরো!
এমনি করে আমায় মারো।
লুকিয়ে থাকি আমি পালিয়ে বেড়াই-
ধরা পড়ে গেছি, আর কি এড়াই?
যা-কিছু আছে সব কাড়ো কাড়ো।
এবার যা করবার তা সারো সারো।
আমি হারি কিম্বা তুমিই হারো।
হাটে ঘাটে বাটে করি মেলা,
কেবল হেসে খেলে গেছে বেলা-
দেখি কেমনে কাঁদাতে পার।
দ্বিতীয়। আচ্ছা ঠাকুর, তুমি কোথায় চলেছ বলো দেখি?
ধনঞ্জয়। যশোর যাচ্ছি রে।
তৃতীয়। কী সর্বনাশ। সেখানে কী করতে যাচ্ছ।
ধনঞ্জয়। একবার রাজাকে দেখে আসি। চিরকাল কি তোদের সঙ্গেই কাটাব? এবার রাজ-দরবারে নাম রেখে আসব।
চতুর্থ। তোমার উপরে রাজার যে ভারি রাগ। তার কাছে গেলে কি তোমার রক্ষা আছে।
পঞ্চম। জান তো, যুবরাজ তোমাকে শাসন করতে চায় নি বলে তাকে এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গেল।
ধনঞ্জয়। তোরা যে মার সইতে পারিস নে। সেইজন্যে, তোদের মারগুলো সব নিজের পিঠে নেবার জন্যে স্বয়ং রাজার কাছে চলেছি। পেয়াদা নয় রে পেয়াদা নয়- যেখানে স্বয়ং মারের বাবা বসে অছে সেইখানে ছুটেছি।
প্রথম। না না, সে হবে না ঠাকুর, সে হবে না।
ধনঞ্জয়। খুব হবে- পেট ভরে হবে, আনন্দে হবে।
প্রথম। তবে আমরাও তোমার সঙ্গে যাব।
ধনঞ্জয়। পেয়াদার হাতে আশ মেটে নি বুঝি?
দ্বিতীয়। না ঠাকুর, সেখানে একলা যেতে পারছ না, আমরাও সঙ্গে যাব।
ধনঞ্জয়। আচ্ছা, যেতে চাস তো চল্। একবার শহরটা দেখে আসবি।
তৃতীয়। কিছু হাতিয়ার সঙ্গে নিতে হবে।
ধনঞ্জয়। কেন রে? হাতিয়ার নিয়ে কী করবি?
তৃতীয়। যদি তোমার গায়ে হাত দেয় তা হলে-
ধনঞ্জয়। তা হলে তোরা দেখিয়ে দিবি হাত দিয়ে না মেরে কী করে হাতিয়ার দিয়ে মারতে হয়। কী আমার উপকারটা করতেই যাচ্ছ! তোদের যদি এইরকম বুদ্ধি হয়, তবে এইখানেই থাক্।