হিমি। না, সে হতেই পারে না। আমি কিচ্ছু শ্রান্ত হইনি।
অখিল। আচ্ছা, নাহয় আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে কাজ করি।
হিমি। এ-সব কাজ—
অখিল। জানি, ওকালতির চেয়ে অনেক বেশি শক্ত।
হিমি। না, আমি তা বলছিনে।
অখিল। না, সত্যি কথা। আমাকে যদি বার্লি তৈরি করতে হয়, আমি হয়তো ঘরে আগুন লাগিয়ে দেব।
হিমি। কী বলছেন আপনি।
অখিল। একটুও বাড়িয়ে বলছি নে। ঘরে আগুন লাগানো আমাদের অভ্যেস। বুঝতে পারছ না?— দেখো-না কেন, তুমি তো যতীনের জন্যে বার্লি তৈরি করছ, আমি হয়তো এমন কিছু তৈরি করে বসে আছি যেটা রোগীর পথ্য নয়, অরোগীর পক্ষেও গুরুপাক। তুমি বোসো, দুটো কথা তোমার সঙ্গে কয়ে নিই।
হিমি। এখন কিন্তু গল্প করবার মতো—
অখিল। রামো! গল্প করতে পারলে আমাদের ব্যাবসা ছেড়ে দিতুম, দ্বিতীয় বঙ্কিম চাটুজ্জে হয়ে উঠতুম। হাসছ কী। আমাদের অনেক কথাই বানাতে হয়, একটুও ভালো লাগে না— গল্প বানাতে পারলে এ ব্যাবসা ছেড়ে দিতুম। তুমি বোধ হয় গল্প লেখা শুরু করেছ?
হিমি। না।
অখিল। নাটক তৈরি—
হিমি। না, আমার ও-সব আসে না।
অখিল। কী করে জানলে।
হিমি। ভাষায় কুলোয় না।
অখিল। নাটক তৈরি করতে ভাষার দরকার হয় না। খাতাপত্র কিছুই চাই নে। হয়তো এখনই তোমার নাটক শুরু হয়েছে-বা, কে বলতে পারে।
হিমি। আমি যাই, মাসিকে ডেকে দিই।
অখিল। না, দরকার হবে না। আমি বাজে কথা বন্ধ করলুম, কাজের কথাই পাড়ব। ভেবেছিলুম যতীনকেই বলব। কিন্তু তার শরীর যে-রকম এখন—
হিমি। তাঁর ব্যাবসার কোনো গুজব আমার কানে উঠেছে কি না এ কথা প্রায় আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি হয়তো—
অখিল। আমি জানি, ব্যাবসা গেছে তলিয়ে—
হিমি। পায়ে পড়ি, তাঁকে এ খবর দেবেন না। আর যাই হোক, তাঁর এই বাড়িটা তো—
অখিল। যতীন বাড়ির কথা বলে নাকি।
হিমি। কেবল ঐ কথাই বলছেন। একদিন ধুম করে গৃহপ্রবেশ হবে, তারই প্ল্যান—
অখিল। গৃহপ্রবেশের আয়োজন তো হয়েছে—
হিমি। আপনি কী করে জানলেন।