পূর্ণ। আমাদেরও তো বয়স খুব প্রাচীন হয় নি, কিন্তু আমরা তো —
রসিক। তা তো দেখছি, আপনি খুব দূরে দূরেই থাকেন — কিন্তু উনি হয়তো সেটাকে ঠিক ভদ্রতা বলেই গ্রহণ করেন না। ওঁর হয়তো ভ্রম হচ্ছে আপনি ওঁকে অগ্রাহ্য করেন।
পূর্ণ। বলেন কী রসিকবাবু। কী করব বলুন তো। আমি তো ভেবেই পাই নে, কী কথা বলবার জন্যে আমি ওঁর কাছে অগ্রসর হতে পারি।
রসিক। ভাবতে গেলে ভেবে পাবেন না। না ভেবে অগ্রসর হবেন, তার পরে কথা আপনি বেরিয়ে যাবে।
পূর্ণ। না রসিকবাবু, আমার একটা কথাও বেরোয় না। কী বলব আপনিই বলুন - না।
রসিক। এমন কোনো কথাই বলবেন না যাতে জগতে যুগান্তর উপস্থিত হবে। গিয়ে বলুন, আজকাল হঠাৎ কিরকম গরম পড়েছে।
পূর্ণ। তিনি যদি বলেন 'হাঁ গরম পড়েছে' তার পরে কী বলব।
বিপিন ও শ্রীশের প্রবেশ
শ্রীশ। ( চন্দ্রবাবুকে ও নির্মলাকে নমস্কার করিয়া, নির্মলার প্রতি ) আপনাদের উৎসাহ ঘড়ির চেয়ে এগিয়ে চলছে। এই দেখুন, এখনো সাড়ে ছটা বাজে নি।
নির্মলা। আজ আপনাদের সভায় আমার প্রথম দিন, সেইজন্যে সভা বসবার পূর্বেই এসেছি — প্রথম সভ্য হবার সংকোচ ভাঙতে একটু সময় দরকার।
বিপিন। কিন্তু, আপনার কাছে নিবেদন এই যে, আমাদের কিছুমাত্র সংকোচ করে চলবেন না। আজ থেকে আপনি আমাদের ভার নিলেন ; লক্ষ্মীছাড়া পুরুষ সভ্যগুলিকে অনুগ্রহ করে দেখবেন শুনবেন এবং হুকুম করে চালাবেন।
রসিক। যান পূর্ণবাবু, আপনিও একটা কথা বলুন গে।
পূর্ণ। কী বলব।
নির্মলা। চালাবার ক্ষমতা আমার নেই।
শ্রীশ। আপনি কি আমাদের এতই অচল বলে মনে করেন।
বিপিন। লোহার চেয়ে অচল আর কী আছে। কিন্তু, আগুন তো লোহাকে চালাচ্ছে — আমাদের মতো ভারী জিনিসগুলোকে চলনসই করে তুলতে আপনাদের মতো দীপ্তির দরকার।
রসিক। শুনছেন তো পূর্ণবাবু?
পূর্ণ। আমি কী বলব বলুন - না।
রসিক। বলুন, লোহাকে চালাতে চাইলেও আগুন চাই, গলাতে চাইলেও আগুন চাই।
বিপিন। কী পূর্ণবাবু, রসিকবাবুর সঙ্গে পরিচয় হয়েছে?
পূর্ণ। হাঁ।
বিপিন। আপনার শরীর আজ ভালো আছে তো?
পূর্ণ। হাঁ।
বিপিন। অনেকক্ষণ এসেছেন নাকি।