মাসি। মণির কথা জিজ্ঞাসা করলে কী জবাব দেব ভেবে পাচ্ছি নে। আর তো আমি কথা বানিয়ে উঠতে পারি নে— নিজের উপর ধিক্কার জন্মে গেল। ও একটু ঘুমিয়ে পড়লে তার পরে ঘরে যাব।
ডাক্তার। আমি বাইরে অপেক্ষা করব। রুগী কেমন থাকে ঘণ্টাখানেক পরে খবর দেবেন। ইতিমধ্যে উকিলকে ঠেকিয়ে রাখতে হবে, ওদের মুখ দেখলে সহজ অবস্থাতেই নাড়ী ছাড়ব ছাড়ব করে।
প্রতিবেশিনী। এই যে, শম্ভু।
শম্ভু। হ্যাঁ, দিদি।
প্রতিবেশিনী। একবার যতীনকে দেখে যেতে চাই। মাসি নেই, এইবেলা—
শম্ভু। কী হবে গিয়ে, দিদি।
প্রতিবেশিনী। নাটোরের মহারাজার ওখানে একটা কাজ খালি হয়েছে। আমার ছেলের জন্যে যতীনের কাছ থেকে একখানা চিঠি লিখিয়ে—
শম্ভু। দিদি, সে কোনোমতেই হবে না। মাসি জানতে পারলে রক্ষে থাকবে না।
প্রতিবেশিনী। জানবে কী করে। আমি ফস্ করে পাঁচ মিনিটের মধ্যে—
শম্ভু। মাপ করো দিদি, সে কোনোমতেই হবে না।
প্রতিবেশিনী। হবে-না! তোমার মাসি মনে করেন, আমাদের ছোঁয়াচ লাগলে তাঁর বোনপো বাঁচবে না। এদিকে নিজের কথাটা ভেবে দেখেন না। স্বামীটিকে খেয়েছেন, একটিমাত্র মেয়ে সেও গেছে, বাপমা কাউকেই রাখলে না। এইবার বাকি আছে ঐ যতীন। ওকে শেষ করে তবে উনি নড়বেন। নইলে ওঁর আর মরণ নেই। আমি বলে রাখলুম শম্ভু, দেখে নিস্— মাসিতে যখন ওকে পেয়েছে, যতীনের আশা নেই।
শম্ভু। ঐ আমাকে ডাকছেন। তুমি এখন যাও।
প্রতিবেশিনী। ভয় নেই, আমি চললুম।
যতীন। (পায়ের শব্দে চমকাইয়া) মণি!
শম্ভু। কর্তাবাবু, আমি শম্ভু। আমাকে ডাকছিলেন?
যতীন। একবার তোর বউঠাকরুনকে ডেকে দে।
শম্ভু। কাকে।
যতীন। বউঠাকরুনকে।