জয়সিংহ। অপরাধ করেছি কি?
রঘুপতি। আবার?
কে নিয়েছে অপরাধ তব?—
ঘোর কলি
এসেছে ঘনায়ে। বাহুবল রাহুসম
ব্রহ্মতেজ গ্রাসিবারে চায় — সিংহাসন
তোলে শির যজ্ঞবেদী-'পরে। হায় হায়,
কলির দেবতা তোমরাও চাটুকার
সভাসদ্সম, নতশিরে রাজ-আজ্ঞা
বহিতেছ? চতুর্ভুজা, চারি হস্ত আছ
জোড় করি! বৈকুণ্ঠ কি আবার নিয়েছে
কেড়ে দৈত্যগণ? গিয়েছে দেবতা যত
রসাতলে? শুধু, দানবে মানবে মিলে
বিশ্বের রাজত্ব দর্পে করিতেছে ভোগ?
দেবতা না যদি থাকে, ব্রাহ্মণ রয়েছে।
ব্রাহ্মণের রোষযজ্ঞে দণ্ড সিংহাসন
হবিকাষ্ঠ হবে।
জয়সিংহের নিকট গিয়া সস্নেহে
বৎস, আজ করিয়াছি
রুক্ষ আচরণ তোমা-'পরে — চিত্ত বড়ো
ক্ষুব্ধ মোর।
জয়সিংহ। কী হয়েছে প্রভু!
রঘুপতি। কী হয়েছে!
শুধাও অপমানিত ত্রিপুরেশ্বরীরে।
এই মুখে কেমনে বলিব কী হয়েছে!
জয়সিংহ। কে করেছে অপমান?
রঘুপতি। গোবিন্দমাণিক্য।
জয়সিংহ। গোবিন্দমাণিক্য! প্রভু, কারে অপমান?
রঘুপতি। কারে! তুমি, আমি, সর্বশাস্ত্র, সর্বদেশ,
সর্বকাল, সর্বদেশকাল-অধিষ্ঠাত্রী
মহাকালী, সকলেরে করে অপমান
ক্ষুদ্র সিংহাসনে বসি। মা'র পূজা-বলি