উভয়ে। অসুখ নয় তো?
রসিক। তার চেয়ে বেশি। তাঁদের বিবাহের সম্বন্ধ —
শ্রীশ। বলেন কী রসিকবাবু। বিবাহের তো কোনো কথা শোনা যায় নি —
রসিক। কিচ্ছু না — হঠাৎ মা কাশী থেকে এসে দুটো অকালকুষ্মাণ্ডের সঙ্গে মেয়ে - দুটির বিবাহ স্থির করেছেন —
বিপিন। এ তো কিছুতেই হতে পারে না রসিকবাবু।
রসিক। মশায়, পৃথিবীতে যেটা অপ্রিয় সেইটেরই সম্ভাবনা বেশি। ফুলগাছের চেয়ে আগাছাই বেশি সম্ভবপর।
বিপিন। কিন্তু মশায়, আগাছা উৎপাটন করতে হবে —
শ্রীশ। ফুলগাছ রোপণ করতে হবে —
রসিক। তা তো বটেই, কিন্তু করে কে মশায়।
শ্রীশ। আমরা করব। কী বল বিপিন।
বিপিন। নিশ্চয়ই।
রসিক। কিন্তু, কী করবেন।
বিপিন। যদি বলেন তো সেই ছেলেদুটোকে পথের মধ্যে —
রসিক। বুঝেছি, সেটা মনে করলেও শরীর পুলকিত হয়। কিন্তু, বিধাতার বরে অপাত্র জিনিসটা অমর — দুটো গেলে আবার দশটা আসবে।
বিপিন। এদের দুটোকে যদি ছলে বলে কিছুদিন ঠেকিয়ে রাখতে পারি তা হলে ভাববার সময় পাওয়া যাবে।
রসিক। ভাববার সময় সংকীর্ণ হয়ে এসেছে। এই শুক্রবারে তারা মেয়ে দেখতে আসবে।
বিপিন। এই শুক্রবারে?
শ্রীশ। সে তো পরশু।
রসিক। আজ্ঞে, পরশুই তো বটে। শুক্রবারকে তো পথের মধ্যে ঠেকিয়ে রাখা যায় না।
শ্রীশ। আচ্ছা, আমার একটা প্ল্যান মাথায় এসেছে।
রসিক। কিরকম শুনি।
শ্রীশ। সেই ছেলেদুটোকে বাড়ির কেউ চেনে?
রসিক। কেউ না।
শ্রীশ। তারা বাড়ি চেনে?
রসিক। তাও না।
শ্রীশ। তা হলে বিপিন যদি সেদিন তাদের কোনো রকম করে আটকে রাখতে পারে তো আমি তাদের নাম নিয়ে নৃপবালাকে—
বিপিন। জানই তো ভাই, আমার কোনো রকম কৌশল মাথায় আসে না। তুমি ইচ্ছে করলে কৌশলে ছেলেদুটোকে ভুলিয়ে রাখতে পারবে — আমি বরঞ্চ নিজেকে তাদের নামে চালিয়ে দিয়ে নীরবালাকে —
রসিক। কিন্তু মশায়, এ স্থলে তো গৌরবে বহুবচন খাটবে না। দুটি ছেলে আসবার কথা আছে, আপনাদের একজনকে দুজন বলে চালানো আমার পক্ষে কঠিন হবে —