নলিনী। দেখবি? এই দেখ চিঠি। সশরীরে আসবেন তার অ্যানাউন্স্মেণ্ট। সেকালে বিশু ডাকাত এইরকম খবর পাঠিয়ে ডাকাতি করত।
চারু। ডাকাতি?
নলিনী। নয় তো কী। একজন সরলা অবলার হৃদয়ভাণ্ডার লুঠ! তার সিঁধ-কাঠিটা দেখবি? এই দেখ্।
চারু। ইস্। এ যে হীরে-দেওয়া ব্রেস্লেট! যা বলিস, তোর কপাল ভালো। এ বুঝি তোর জন্মদিনের —
নলিনী। হাঁ হাঁ, জন্মদিনের উপহার — আমার জন্ম মৃত্যু বিবাহ এই তিনকেই ঘিরে ফেলবার সুদর্শন চক্র।
চারু। সুদর্শন চক্র বটে। যা বলিস, মিস্টার নন্দীর টেস্ট্ আছে।
নলিনী। ব্রেসলেটও তার প্রমাণ, আর ব্রেসলেট পরাবার জন্য যে মৃণালবাহু বেছে নিয়েছেন তাতেও প্রমাণ।
চারু। আজ যে বড়ো ঠাট্টার সুর ধরেছিস।
নলিনী। তা হলে গম্ভীর সুর ধরি।
গান
সে যেন আসবে আমার মন বলেছে।
হাসির ’পরে তাই তো চোখের জল গলেছে।
দেখ্ লো তাই দেয় ইশারা
তারায় তারা;
চাঁদ হেসে ওই হল সারা তাহাই লখি।
শুনে যা ও সখী।
চারু। আমি যদি পুরুষ হতুম নেলি, তা হলে তোর ঐ পায়ের কাছে প’ড়ে-
নলিনী। জুতোর লেস লাগাতিস বুঝি? আর ব্রেসলেট পরাত কে।
মিস্টার লাহিড়ি। আজ বরুণ নন্দীর আসবার কথা আছে না?
নলিনী। হাঁ, তাঁর চিঠি পেয়েছি।
মিস্টার লাহিড়ি। তা হলে এখনো যে ড্রেস কর নি?
নলিনী। কী ড্রেস পরব, তাই তো এতক্ষণ চারুর সঙ্গে পরামর্শ করছিলুম।
মিস্টার লাহিড়ি। দেখো, ভুলো না, সার হার্কোর্ট তোমাকে কী চিঠি লিখেছেন, সেইটে বরুণ নন্দী দেখতে চেয়েছিল — সেটা —
নলিনী। হাঁ, সেটা আমি বের করে রাখব, আর জেনেরাল্ পর্কিন্সের ভাইঝি তার অটোগ্রাফওয়ালা যে ফোটো আমাকে দিয়েছিল, সেটাও —
মিস্টার লাহিড়ি। হাঁ হাঁ সেটা, আর সেই যে —
নলিনী। বুঝেছি, গবর্মেণ্ট্ হাউসে নেমন্তন্নে গিয়েছিলুম, তার নাচের প্রোগ্রামটা।
মিস্টার লাহিড়ি। আজ কোন্ গানটা গাবে বলো তো।