শম্ভু। তিনি তো এখনো ফেরেন নি।
যতীন। কোথায় গেছেন।
শম্ভু। সীতারামপুরে।
যতীন। আজ গেছেন?
শম্ভু। না, আজ তিন দিন হল।
যতীন। তুই কে? আমি কি চোখে ঠিক দেখছি।
শম্ভু। আমি শম্ভু।
যতীন। ঠিক করে বল্ তো, আমার তো কিছু ভুল হচ্ছে না?
শম্ভু। না, বাবু।
যতীন। কোন্ ঘরে আছি আমি? এই কি সীতারামপুর।
শম্ভু। না, কলকাতায় এ তো আপনার শোবার ঘর।
যতীন। মিথ্যে নয়? এ সমস্তই মিথ্যে নয়?
শম্ভু। আমি মাসিমাকে ডেকে দিই।
যতীন। আমি যে মরে যাই নি, তা কী করে জানব, মাসি। হয়তো সবই উলটে গেছে।
মাসি। ও কী বলছিস, যতীন।
যতীন। তুমি তো আমার মাসি?
মাসি। না তো কী, যতীন।
যতীন। হিমিকে ডেকে দাও-না, সে আমার পাশে বসুক। সে যেন থাকে আমার কাছে। এখনই যেন কোথাও না যায়।
মাসি। আয় তো হিমি, এখানে বোস্ তো!
যতীন। ঐ বাঁশিটা থামিয়ে দাও-না। ওটা কি গৃহপ্রবেশের জন্যে আনিয়েছ। ওর আর দরকার নেই।
মাসি। পাশের বাড়িতে বিয়ে, ও বাঁশি সেইখানে বাজছে।
যতীন। বিয়ের বাঁশি? ওর মধ্যে অত কান্না কেন। বেহাগ বুঝি? তোমাকে কি আমার স্বপ্নের কথা বলেছি, মাসি।
মাসি। কোন্ স্বপ্ন।
যতীন। মণি যেন আমার ঘরে আসবার জন্যে দরজা ঠেলছিল। কোনোমতেই দরজা এতটুকুর বেশি ফাঁক হল না। সে বাইরে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল। কিছুতেই ঢুকতে পারলে না। অনেক করে ডাকলুম, তার আর গৃহপ্রবেশ হল না। হল না, হল না, হল না।—
মাসি। না যতীন, না, শপথ করে বলছি তোর বাড়ি ঠিক আছে— অখিল এসেছে, যদি বলিস তাকে ডেকে দিই।
যতীন। বাড়িটা তবে আছে? সে তো অপেক্ষা করতে পারবে, আমার মতো সে তো ছায়া নয়। বৎসরের পর বৎসর সে দরজা