নূতন মৃত্তিকা ছেয়ে। সেথা তার প্রীতি,
সেথাকার ধর্ম তার, সেথাকার রীতি।
অন্তরের যোগসূত্র ছিঁড়েছে যখন
তোমার নিয়মপাশ নির্জীব বন্ধন —
ধর্মে বাঁধিছে না তারে, বাঁধিতেছে বলে।
ছেড়ে দাও, ছেড়ে দাও। যাও, বৎ সে, চলে
যাও তব গৃহকর্মে ফিরে — যাও তব
স্নেহপ্রীতিজড়িত সংসারে, অভিনব
ধর্মক্ষেত্রমাঝে। এসো প্রিয়ে, মোরা দোঁহে
চলে যাই তীর্থধামে কাটি মায়ামোহে,
সংসারের দুঃখ-সুখ-চক্র-আবর্তন
ত্যাগ করি —
রমাবাই। তার আগে করিব ছেদন
আমার সংসার হাতে পাপের অঙ্কুর
যতগুলি জন্মিয়াছে। করি যাব দূর
আমার গর্ভের লজ্জা। কন্যার কুযশে
মাতার সতীত্বে যেন কলঙ্ক পরশে।
অনলে অঙ্গারসম সে কলঙ্ককালি
তুলিব উজ্জ্বল করি চিতানল জ্বালি।
সতীখ্যাতি রটাইব দুহিতার নামে,
সতীমঠ উঠাইব এ শ্মশানধামে
কন্যার ভস্মের ‘ পরে।
অমাবাই। ছাড়ো লোকলাজ
লোকখ্যাতি — হে জননী, এ নহে সমাজ,
এ মহাশ্মশানভূমি। হেথা পুণ্যপাপ
লোকের মুখের বাক্যে করিয়ো না মাপ,
সত্যেরে প্রত্যক্ষ করো মৃত্যুর আলোকে।
সতী আমি। ঘৃণা যদি করে মোরে লোকে
তবু সতী আমি। পরপুরুষের সনে
মাতা হয়ে বাঁধ যদি মৃত্যুর মিলনে
নির্দোষ কন্যারে, লোকে তোরে ধন্য কবে,
কিন্তু, মাতঃ, নিত্যকাল অপরাধী রবে