ভৃত্য। তিনটি বাবু এসেছে দেখা করতে।
ইন্দু। তাদের যেতে বলে দে। সকাল থেকে কেবলই বাবু আসছে।
নিবারণ। না না, ভদ্রলোক এসেছে, দেখা করা চাই।
ইন্দু। তোমার যে নাবার সময় হয়েছে।
নিবারণ। একবার শুনে নিই কী জন্যে এসেছেন, বেশি দেরি হবে না।
ইন্দু। তুমি একবার গল্প পেলে আর উঠতে চাইবে না, আবার কালকের মতো খেতে দেরি হবে। আচ্ছা, আমি ঐ পাশের ঘরে দাঁড়িয়ে রইলুম, পাঁচ মিনিট বাদে ডেকে পাঠাব।
নিবারণ। তোর শাসনের জ্বালায় আমি আর বাঁচি নে। চাণক্যের শ্লোক জানিস তো? প্রাপ্তে তু ষোড়শে বর্ষে পুত্রে মিত্রবদাচরেৎ। তা আমার কি সে বয়স পেরোয় নি?
[ ইন্দুর প্রস্থান
নিবারণ। ( ভৃত্যের প্রতি) বাবুদের ডেকে নিয়ে আয়।
চন্দ্রকান্ত, বিনোদবিহারী ও গদাইয়ের প্রবেশ
নিবারণ। এই যে চন্দ্রবাবু! আসতে আজ্ঞা হোক। আপনারা সকলে বসুন। ওরে, তামাক দিয়ে যা।
চন্দ্রকান্ত। আজ্ঞে না, তামাক থাক্।
নিবারণ। তা, ভালো আছেন চন্দ্রবাবু?
চন্দ্রকান্ত। আজ্ঞে হাঁ, আপনার আশীর্বাদে একরকম আছি ভালো।
নিবারণ। আপনাদের কোথায় থাকা হয়?
বিনোদ। আমরা কলকাতাতেই থাকি।
চন্দ্রকান্ত। মহাশয়ের কাছে আমাদের একটি প্রস্তাব আছে।
নিবারণ। ( শশব্যস্ত হইয়া) কী বলুন।
চন্দ্রকান্ত। মহাশয়ের ঘরে আদিত্যবাবুর যে অবিবাহিত কন্যাটি আছেন তাঁর জন্যে একটি সৎপাত্র পাওয়া গেছে। যদি অভিপ্রায় করেন —
নিবারণ। অতি উত্তম কথা। পাত্রটি কে?
চন্দ্রকান্ত। বিনোদবিহারীবাবুর নাম শুনেছেন বোধ করি।
নিবারণ। বিলক্ষণ! তা আর শুনি নি! তিনি আমাদের দেশের একজন প্রধান লেখক। ‘ জ্ঞানরত্নাকর ' তো তাঁরি লেখা?
চন্দ্রকান্ত। আজ্ঞে না। সে বৈকুণ্ঠ বসাক বলে একটি লোকের লেখা।
নিবারণ। তাই বটে। আমার ভুল হয়েছে। তবে ‘ প্রবোধলহরী '? আমি ঐ দুটোতে বরাবর ভুল করে থাকি।
চন্দ্রকান্ত। আজ্ঞে না। ‘ প্রবোধলহরী ' তাঁর লেখা নয়। সেটা কার বলতে পারি নে।
নিবারণ। তবে তাঁর একখানা বইয়ের নাম করুন দেখি।