বিনোদ। এই খানিকক্ষণ হল তিনি চলে গেছেন, তুমি আর দেরি কোরো না।
[ প্রস্থান
ইন্দু ও কমলের প্রবেশ
কমল। তোর জ্বালায় তো আর বাঁচি নে ইন্দু! তুই আবার এ কী জটা পাকিয়ে বসে আছিস! ললিতবাবুর কাছে তোকে কাদম্বিনী বলে উল্লেখ করতে হবে নাকি?
ইন্দু। তা কী করব দিদি! কাদম্বিনী না বললে যদি সে না চিনতে পারে তা হলে ইন্দু বলে পরিচয় দিয়ে লাভটা কী?
কমল। ইতিমধ্যে তুই এত কাণ্ড কখন করে তুললি, তা তো জানি নে। একটা যে আস্ত নাটক বানিয়ে বসেছিস!
ইন্দু। তোমার বিনোদবাবুকে বোলো, তিনি লিখে ফেলবেন এখন, তার পর মেট্রপলিটান থিয়েটারে অভিনয় দেখতে যাব। ঐ ভাই, তোমার বিনোদবাবু আসছেন, আমি পালাই।
[ প্রস্থান
বিনোদের প্রবেশ
বিনোদ। মহারানী, আমার বন্ধু এলে কোথায় তাঁকে বসাব?
কমল। এই ঘরেই বসাবেন।
বিনোদ। ললিতের সঙ্গে আপনার যে বন্ধুর বিবাহ স্থির করতে হবে তাঁর নামটি কী?
কমল। কাদম্বিনী — বাগবাজারের চৌধুরীদের মেয়ে।
বিনোদ। আপনি যখন আদেশ করছেন আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব। কিন্তু ললিতের কথা আমি কিছুই বলতে পারি নে। সে যে এ-সব প্রস্তাবে আমাদের কারো কথায় কর্ণপাত করবে, এমন বোধ হয় না।
কমল। আপনাকে সেজন্যে বোধ হয় বেশি চেষ্টা করতেও হবে না — কাদম্বিনীর নাম শুনলেই তিনি আর বড়ো আপত্তি করবেন না।
বিনোদ। তা হলে তো আর কথাই নেই।
কমল। মাপ করেন যদি, আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই।
বিনোদ। এখনি। ( স্বগত) স্ত্রীর কথা না তুললে বাঁচি।
কমল। আপনার স্ত্রী নেই কি?
বিনোদ। কেন বলুন দেখি? স্ত্রীর কথা কেন জিজ্ঞাসা করছেন?
কমল। আপনি তো অনুগ্রহ করে এই বাড়িতেই বাস করছেন, তা, আপনার স্ত্রীকে আমি আমার সঙ্গিনীর মতো করে রাখতে চাই। অবিশ্যি, যদি আপনার কোনো আপত্তি না থাকে।
বিনোদ। আপত্তি! কোনো আপত্তিই থাকতে পারে না। এ তো আমার সৌভাগ্যের কথা!