বসন্ত রায়ের প্রবেশ। প্রতাপাদিত্য চমকিয়া উঠিয়া দণ্ডায়মান
বসন্ত রায়। আমাকে কিসের ভয় প্রতাপ? আমি তোমার পিতৃব্য ; তাতেও যদি বিশ্বাস না হয়, আমি বৃদ্ধ, তোমার কোনো অনিষ্ট করি এমন শক্তিই নেই। ( প্রতাপ নীরব) প্রতাপ একবার রায়গড়ে চলো— ছেলেবেলা কতদিন সেখানে কাটিয়েছ— তারপরে বহুকাল সেখানে যাও নি।
প্রতাপাদিত্য। ( নেপথ্যের দিকে চাহিয়া সগর্জনে) খবরদার! ঐ পাঠানকে ছাড়িস নে!
[ দ্রুত প্রস্থান
বসন্ত রায়ের প্রস্থান। প্রতাপ ও মন্ত্রীর পুনঃপ্রবেশ
প্রতাপাদিত্য। দেখো মন্ত্রী, রাজকার্যে তোমার অত্যন্ত অমনোযোগ দেখা যাচ্ছে।
মন্ত্রী। মহারাজ, এ বিষয়ে আমার কোনো অপরাধ নেই।
প্রতাপাদিত্য। এ বিষয়ের কথা তোমাকে কে বলছে? আমি বলছি রাজকার্যে তোমার অত্যন্ত অমনোযোগ দেখছি। সেদিন তোমাকে চিঠি রাখতে দিলেম, হারিয়ে ফেললে! আর একদিন মনে আছে উমেশ রায়ের কাছে তোমাকে যেতে বলেছিলুম, তুমি লোক দিয়ে কাজ সেরেছিলে।
মন্ত্রী। আজ্ঞে মহারাজ-
প্রতাপাদিত্য। চুপ করো। দোষ কাটাবার জন্যে মিথ্যে চেষ্টা করো না। যাহোক তোমাকে জানিয়ে রাখছি রাজকার্যে তুমি কিছুমাত্র মনোযোগ দিচ্ছ না। যাও, কাল রাত্রে যারা পাহারায় ছিল তাদের কয়েদ করো গে।
সুরমা। ( বিভার গলা ধরিয়া) তুই অমন চুপ করে থাকিস কেন ভাই? যা মনে আছে বলিস নে কেন?
বিভা। আমার আর কী বলবার আছে?
সুরমা। অনেকদিন তাঁকে দেখিস নি। তা তুই-ই নাহয় তাঁকে একখানা চিঠি লেখ্ না। আমি তোর দাদাকে দিয়ে পাঠাবার সুবিধা করে দেব।
বিভা। যেখানে তাঁর আদর নেই সেখানে আসবার জন্যে আমি কেন তাঁকে লিখব? তিনি আমাদের চেয়ে কিসে ছোটো?
সুরমা। আচ্ছা গো আচ্ছা, না হয় তিনি খুব মানী, তাই বলে মানটাই কি সংসারে সকলের চেয়ে বড়ো হল? সেটা কি বিসর্জন করবার কোনো জায়গা নেই।
গান
ওর মানের এ বাঁধ টুটবে না কি টুটবে না?