Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ফাল্গুনী- তৃতীয় দৃশ্য, ৩৫
ফাল্গুনী
জন্মাবার ঢের আগে থেকে।
মরার ঢের পরে পর্যন্ত।
ঠিক বলেছিস্, তা হলে মনটা স্থির থাকবে। আর-কোথাও থেকে এসেছি জানলেই আর-কোথাও যাবার জন্যে মন ছটফট করে।
আর-কোথাওটা বড়ো সর্বনেশে দেশ রে!
সেখানে দেশটা সুদ্ধ চলে। তার পথগুলো চলে।
কিন্তু আমরা-
গান
মোরা চলব না।
মুকুল ঝরে ঝরুক, মোরা ফলব না।
সূর্য তারা আগুন ভুগে
জ্বলে মরুক যুগে যুগে,
আমরা যতই পাই না জ্বালা
জ্বলব না।
বনের শাখা কথা বলে,
কথা জাগে সাগর-জলে,
এই ভুবনে আমরা কিছুই
বলব না।
কোথা হতে লাগে রে টান,
জীবনজলে ডাকে রে বান,
আমরা তো এই প্রাণের টলায়
টলব না॥
ওরে হাসি রে হাসি!
ঐ হাসি শোনা যাচ্ছে।
বাঁচা গেল, এতক্ষণে একটা হাসি শোনা গেল।
যেন গুমোটের ঘোমটা খুলে গেল।
এ যেন বৈশাখের এক পশলা বৃষ্টি।
কার হাসি ভাই।
শুনেই বুঝতে পারছিস নে, আমাদের চন্দ্রহাসের হাসি?
কী আশ্চর্য হাসি ওর।
যেন ঝরনার মতো, কালো পাথরটাকে ঠেলে নিয়ে চলে।