১। বাবাঠাকুর, রাজার কাছে যাচ্ছ, কিন্তু তিনি তোমাকে সহজে ছাড়বেন না।
ধনঞ্জয়। ছাড়বেন কেন বাপসকল! আদর করে ধরে রাখবেন।
১। সে আদরের ধরা নয়।
ধনঞ্জয়। ধরে রাখতে কষ্ট আছে বাপ — পাহারা দিতে হয় — যে-সে লোককে কি রাজা এত আদর করে? রাজবাড়িতে কত লোক যায়, দরজা থেকেই ফেরে — আমাকে ফেরাবে না।
গান
আমাকে যে বাঁধবে ধরে এই হবে যার সাধন,
সে কি অমনি হবে!
আপনাকে সে বাঁধা দিয়ে আমায় দেবে বাঁধন।
সে কি অমনি হবে!
আমাকে যে দুঃখ দিয়ে আনবে আপন বশে-
সে কি অমনি হবে!
তার আগে তার পাষাণ হিয়া গলবে করুণ রসে
সে কি অমনি হবে!
আমাকে যে কাঁদাবে তার ভাগ্যে আছে কাঁদন
সে কি অমনি হবে!
২। বাবাঠাকুর, তোমার গায়ে যদি রাজা হাত দেন তাহলে কিন্তু আমরা সইতে পারব না।
ধনঞ্জয়। আমার এই গা যাঁর তিনি যদি সইতে পারেন বাবা, তবে তোমাদেরও সইবে। যেদিন থেকে জন্মেছি আমার এই গায়ে তিনি কত দুঃখই সইলেন — কত মার খেলেন, কত ধুলোই মাখলেন — হায় হায়-
কে বলেছে তোমায় বঁধু এত দুঃখ সইতে?
আপনি কেন এলে বঁধু আমার বোঝা বইতে?
প্রাণের বন্ধু বুকের বন্ধু,
সুখের বন্ধু দুখের বন্ধু,
তোমায় দেব না দুখ পাব না দুখ,
হেরব তোমার প্রসন্ন মুখ,
আমি সুখে দুঃখে পারব বন্ধু চিরানন্দে রইতে-
তোমার সঙ্গে বিনা কথায় মনের কথা কইতে।
৩। বাবা, আমরা রাজাকে গিয়ে কী বলব?
ধনঞ্জয়। বলব, আমরা খাজনা দেব না।