সীতারাম। হাঁ মহারাজ!
বসন্ত রায়। প্রতাপ আমাকে বন্দী করুক না— আমি আপনি গিয়ে ধরা দিচ্ছি।
সীতারাম। তাতে কোনো ফল হবে না।
বসন্ত রায়। কিন্তু কী হবে সীতারাম! কী করা যায়?
সীতারাম। আমার মাথায় একটা মতলব এসেছে। আপনাকে যেতে হচ্ছে। একবার যশোরে চলুন।
বসন্ত রায়। সে তো যাবই। একবার তো প্রতাপকে বলে কয়ে চেষ্টা করে দেখতেই হবে।
রামচন্দ্র। ( বিস্মিত ভাবে) কী হল রামমোহন?
রামমোহন। সকলই নিষ্ফল হয়েছে।
রামচন্দ্র। ( চমকিয়া) আনতে পারলি নে?
রামমোহন। আজ্ঞে না মহারাজ। কুলগ্নে যাত্রা করেছিলুম।
রামচন্দ্র। ( ক্রুদ্ধ হইয়া) বেটা তোকে যাত্রা করতে কে বলেছিল? তখন তোকে বার বার করে বারণ করলুম, তখন যে তুই বুক ফুলিয়ে গেলি, আর আজ-
রামমোহন। ( কপালে হাত দিয়া) মহারাজ, আমার অদৃষ্টের দোষ।
রামচন্দ্র। ( আরও ক্রুদ্ধ হইয়া) রামচন্দ্র রায়ের অপমান! তুই বেটা, আমার নাম করে ভিক্ষা চাইতে গেলি, আর প্রতাপাদিত্য দিলে না! এতবড়ো অপমান আমাদের বংশে আর কখনো হয় নি।
রামমোহন। ( নত শির তুলিয়া) ওকথা বলবেন না। প্রতাপাদিত্য যদি না দিতেন, আমি যেমন করে পারি আনতুম। প্রতাপাদিত্য রাজা বটেন কিন্তু আমার রাজা তো নন।
রামচন্দ্র। ওরে হতভাগা বেটা, তবে হল না কেন? ( রামমোহন নীরব) রামমোহন, শীঘ্র বল্।
রামমোহন। মহারাজ, তাঁর ভাই আজ কারাগারে।
রামচন্দ্র। তাতে কী হল?
রামমোহন। ভাইয়ের এই বিপদের দিনে তাঁকে একলা ফেলে চলে আসেন, এমন মা কি আমার?
রামচন্দ্র। বটে। আসতে চাইলেন না বটে! আমার লোক গিয়ে ফিরে এল!
রামমোহন। রাগ করেন কেন মহারাজ। রাগ যদি করতে হয় তাহলে যারা আপনার বুদ্ধি নষ্ট করেছে তাদের উপর রাগ করুন।
রামচন্দ্র। তার মানে কী হল?
রামমোহন। যুবরাজ যে আজ বন্দী তার গোড়াকার কথাটা কি এরই মধ্যে ভুললেন? এ-সমস্ত তো আমাদেরই জন্যে! এমন