সীতারাম। এই নৌকা, এই নৌকা, আসুন, উঠে পড়ুন-
নৌকার ভিতর হইতে বসন্ত রায়ের অবতরণ
বসন্ত রায়। দাদা এসেছিস? আয় দাদা আয়।
বাহু প্রসারণ
উদয়াদিত্য। দাদামশায়!
আলিঙ্গন
বসন্ত রায়। কী দাদা?
উদয়াদিত্য। ( উদ্ভ্রান্তভাবে চারিদিকে চাহিয়া) দাদামশায়।
বসন্ত রায়। এই যে আমি দাদা— কেন ভাই।
উদয়াদিত্য। ( দুই হস্ত ধরিয়া) আজ আমি ছাড়া পেয়েছি— তোমাকে পেয়েছি, আর আমার সুখের কী অবশিষ্ট রইল? এ মুহূর্ত আর কতক্ষণ থাকবে?
সীতারাম। ( করজোড়ে) যুবরাজ, নৌকায় উঠুন।
উদয়াদিত্য। ( চমকিত হইয়া) কেন? নৌকায় কেন?
সীতারাম। নইলে এখনই আবার প্রহরীরা আসবে, এখনই ধরে ফেলবে।
উদয়াদিত্য। ( বিস্মিত হইয়া) আমরা কি পালিয়ে যাচ্ছি?
বসন্ত রায়। ( হাত ধরিয়া) হাঁ ভাই— আমি তোকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছি। এ যে পাষাণ-হৃদয়ের দেশ।
সীতারাম। যুবরাজ, আমি তোমাকে উদ্ধার করবার জন্যে কারাগারে আগুন লাগিয়েছি।
উদয়াদিত্য। কী সর্বনাশ— মরবি যে।
সীতারাম। তুমি যতদিন কয়েদে ছিলে প্রতিদিনই আমি মরেছি।
উদয়াদিত্য। ( অনেকক্ষণ ভাবিয়া) না আমি পালাতে পারব না।
বসন্ত রায়। কেন দাদা, এ বুড়োকে কি ভুলে গেছিস?
উদয়াদিত্য। ( দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়িয়া) না না,— আমি কারাগারে ফিরে যাই।
বসন্ত রায়। ( হাত চাপিয়া ধরিয়া) কেমন করে যাবি যা দেখি! আমি যেতে দেব না।