মুক্তিয়ার খাঁর প্রবেশ
মুক্তিয়ার। ( সেলাম করিয়া) হাঁ মহারাজ।
বসন্ত রায়। আহারাদি হয়েছে?
মুক্তিয়ার। আজ্ঞা হাঁ। গোপনে কিছু কথা আছে।
বসন্ত রায়। আচ্ছা, তোমরা সব যাও।
[ সকলের প্রস্থান
আজ তবে তোমার এখানে থাকবার বন্দোবস্ত করে দিই।মুক্তিয়ার। আজ্ঞা না প্রয়োজন নেই। কাজ সেরে এখনই যেতে হবে।
বসন্ত রায়। না তা হবে না খাঁ সাহেব, আজ তোমাকে ছাড়ব না। আজ এখানে থাকতেই হবে। লোকজন তো সঙ্গে অনেক দেখছি। কোথাও লড়াইয়ে বেরিয়েছ না কি? রসদের বন্দোবস্ত করে দিতে হবে তো। ওরে-
মুক্তিয়ার। না মহারাজ, কিছুই করতে হবে না, শীঘ্রই যাব।
বসন্ত রায়। কেন বলো দেখি, বিশেষ কাজ আছে বুঝি? প্রতাপ ভালো আছে তো?
মুক্তিয়ার। মহারাজ ভালো আছেন।
বসন্ত রায়। তবে কী তোমার কাজ শীঘ্র বলো, বিশেষ জরুরি শুনে উদ্বেগ হচ্ছে। প্রতাপের তো কোনো বিপদ ঘটে নি?
মুক্তিয়ার। আজ্ঞা না, তাঁর কোনো বিপদ ঘটে নি। মহারাজের একটি আদেশ পালন করতে এসেছি।
বসন্ত রায়। কী আদেশ এখনই বলো।
আদেশপত্র বাহির করিয়া বসন্ত রায়ের হস্তে প্রদান এবং বসন্ত
রায়ের পত্র পাঠ। দ্বারে সৈন্যগণের সমাবেশ
বসন্ত রায়। এ কি প্রতাপের লেখা!
মুক্তিয়ার। হাঁ।
বসন্ত রায়। খাঁসাহেব, এ কি প্রতাপের স্বহস্তে লেখা।
মুক্তিয়ার। হাঁ মহারাজ!
বসন্ত রায়। খাঁসাহেব, আমি প্রতাপকে নিজের হাতে মানুষ করেছি। (কিছুক্ষণ নীরবে থাকিয়া) প্রতাপ যখন এতটুকু ছিল সে আমাকে একমুহূর্ত ছেড়ে থাকতে চাইত না। দাদা কোথায়? উদয় কোথায়?
মুক্তিয়ার। তিনি বন্দী হয়েছেন, মহারাজের নিকট বিচারের জন্যে পাঠানো হয়েছে।
বসন্ত রায়। উদয় বন্দী হয়েছে! বন্দী হয়েছে খাঁসাহেব! আমি একবার তাকে কি দেখতে পাব না?
মুক্তিয়ার। ( করজোড়ে) না জনাব হুকুম নেই।
বসন্ত রায়। ( মুক্তিয়ার খাঁর হাত ধরিয়া) একবার তাকে দেখতে দেবে না খাঁসাহেব?
মুক্তিয়ার। আমি আদেশপালক ভৃত্য মাত্র।
বসন্ত রায়। এস সাহেব, তোমার অন্য আদেশটাও পালন করো।
মুক্তিয়ার। ( মাটি ছুঁইয়া সেলাম করিয়া জোড়হস্তে) মহারাজ, আমাকে মার্জনা করবেন— আমি প্রভুর আদেশ পালন করছি মাত্র, আমার কোনো দোষ নেই।