কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে-
ভেবেই না কুলায় রে!
উদয়াদিত্য। ঠাকুর, তুমি কি ভাবছ বিভা আমার পথের সঙ্গিনী? ওকে আমি ওর শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছি।
ধনঞ্জয়। বেশ, বেশ, হরি যেখানে নিয়ে যান সেইখানেই ভালো। দেখি তিনি কোন্খানে পৌঁছিয়ে দেন— আমিও সঙ্গে আছি।— কোনো ভয় নেই দিদি কোনো ভয় নেই।
রামচন্দ্র। রমাই, তুমি যাও— লোকজনদের দেখো গে।
[ রমাইয়ের প্রস্থান
সেনাপতি, তুমি এখানে বসো, রমাইয়ের হাসি আমার ভালো লাগছে না।
ফর্নাণ্ডিজ। মহারাজ, রমাইয়ের হাসি গন্ধকের আলোর মতো, তার ধোঁয়ায় দম আটকে আসে।
রামচন্দ্র। ঠিক বলেছ সেনাপতি, আমার ইচ্ছা হচ্ছিল উঠে চলে যাই, আজ গানবাজনা ভাল জমছে না ফর্নাণ্ডিজ।
ফর্নাণ্ডিজ। না মহারাজ জমছে না। আমার এই বুকে বাজছে, আর-একদিনের কথা মনে পড়ছে।
রামচন্দ্র। গুজবটা কি সত্যি?
ফর্নাণ্ডিজ। কিসের গুজব?
রামচন্দ্র। ওই তাঁরা কি যশোর থেকে আসছেন?
ফর্নাণ্ডিজ। হাঁ মহারাজ, যশোরের একটি লোকের কাছে শুনলুম তাঁদের আসবার কথা হচ্ছে। আমাকে যদি আদেশ করেন মহারাজ আমি তাঁদের এগিয়ে আনবার জন্যে যাই।
রামচন্দ্র। এগিয়ে আনবে? তাহলে কিন্তু মন্ত্রী রমাই সবাই হাসবে।
ফর্নাণ্ডিজ। মহারাজ যদি আদেশ করেন তাদের হাসিসুদ্ধ মুখটা আমি একেবারে সাফ করে দিতে পারি!
রামচন্দ্র। না, না, গোলমাল করে কাজ নেই। কিন্তু সেনাপতি আমি তোমাকে গোপনে বলছি, কাউকে বলো না, আমি তাকে কিছুতে ভুলতে পারছি নে! কালই রাত্রে আমি তাকে স্বপ্নে দেখেছি।
ফর্নাণ্ডিজ। মহারাজ আমি আর কি বলব— তাঁর জন্যে প্রাণ দিলে যদি কোনো কাজেও না লাগে তবুও দিতে ইচ্ছা হচ্ছে।
রামচন্দ্র। দেখো সেনাপতি, এক কাজ করলে হয় না?
ফর্নাণ্ডিজ। কী বলুন।
রামচন্দ্র। মোহন যদি একবার খবর পায় যে তাঁরা আসছেন তাহলে সে আপনি ছুটে যাবে। এক বার কোনো মতে তাকে সংবাদটা জানাও না। কিন্তু দেখো, আমার নাম করো না।