বিক্রমদেব। বার বার এক কথা!
নির্মম! নিষ্ঠুর! কাজ, কাজ! যাও, যাও!
যেতে কি পারি নে আমি? কে চাহে থাকিতে?
সবিনয় করপুটে কে মাগে তোমার
সযত্নে ওজন-করা বিন্দু বিন্দু কৃপা?
এখনি চলিনু।
অয়ি হৃদিলগ্না লতা,
ক্ষমো মোরে, ক্ষমো অপরাধ। মোছো আঁখি,
ম্লান মুখে হাসি আনো, অথবা ভ্রূকুটি —
দাও শাস্তি, করো তিরস্কার।
সুমিত্রা। মহারাজ,
এখন সময় নয়— আসিয়ো না কাছে,
এই মুছিয়াছি অশ্রু, যাও রাজ-কাজে।
বিক্রমদেব। হায় নারী, কী কঠিন হৃদয় তোমার!
কোনো কাজ নাই প্রিয়ে, মিছে উপদ্রব।
ধান্যপূর্ণ বসুন্ধরা, প্রজা সুখে আছে,
রাজকার্য চলিছে অবাধে — এ কেবল,
সামান্য কী বিঘ্ন নিয়ে তুচ্ছ কথা তুলে
বিজ্ঞ বৃদ্ধ অমাত্যের অতি-সাবধান।
সুমিত্রা। ওই শোনো ক্রন্দনের ধ্বনি — সকাতরে
প্রজার আহ্বান। ওরে বৎ স, মাতৃহীন
নোস তোরা কেহ, আমি আছি — আমি আছি —
আমি এ রাজ্যের রানী, জননী তোদের।
[ প্রস্থান
অন্তঃপুরের কক্ষ
সুমিত্রা। এখনো এল না কেন? কোথায় ব্রাহ্মণ?
ওই ক্রমে বেড়ে ওঠে ক্রন্দনের ধ্বনি।