প্রবাসীরে মনে করো এই উপবনে,
এই নির্ঝরিণীতীরে, এই লতাগৃহে,
এই সন্ধ্যালোকে, পশ্চিমগগনপ্রান্তে
ওই সন্ধ্যাতারা-পানে চেয়ে। মনে করো,
আমিও প্রদোষে, প্রবাসে তরুর তলে
একেলা বসিয়া ওই তারকার 'পরে
তোমারি আঁখির তারা পেতেছি দেখিতে।
মনে করো মিশিতেছে এই নীলাকাশে
পুষ্পের সৌরভ-সম তোমার আমার
প্রেম। এক চন্দ্র উঠিয়াছে উভয়ের
বিরহরজন-'পরে।
ইলা। জানি, জানি, নাথ,
জানি আমি তোমার হৃদয়।
কুমারসেন। যাই তবে,
অয়ি তুমি অন্তরের ধন, জীবনের
মর্মস্বরূপিণী, অয়ি সবার অধিক।
দ্বিতীয় সখী। হায় এ কী শুনি!
তৃতীয় সখী। সখী, কেন যেতে দিলে।
প্রথম সখী। ভালোই করেছ। স্বেচ্ছায় না দিলে ছাড়ি
বাঁধন ছিঁড়িয়া যায় চিরদিন তরে!
হায় সখী, হায় শেষে নিবাতে হল কি
উৎ সবের দীপ?
ইলা। সখী, তোরা চুপ কর্,
টুটিছে হৃদয়। ভেঙে দে ভেঙে দে ওই
দীপমালা। বল্ সখী, কে দিবে নিবায়ে
লজ্জাহীনা পূর্ণিমার আলো? কেন আজ
মনে হয়, আমার এ জীবনের সুখ
আজি দিবসের সাথে ডুবিল পশ্চিমে?