আক্রমণ। বুঝি শেষে জাগিয়াছে মনে
বিপদের ভয়, সন্ধির প্রস্তাব-তরে
হয়েছে উন্মুখ।
বিক্রমদেব। ধিক্, ভীরু, কাপুরুষ।
সন্ধি নহে — যুদ্ধ চাই আমি। রক্তে রক্তে
মিলনের স্রোত — অস্ত্রে অস্ত্রে সংগীতের
ধ্বনি। চলো সেনাপতি!
সেনাপতি। যে আদেশ প্রভু!
বিক্রমদেব। এ কী মুক্তি! এ কী পরিত্রাণ! কী আনন্দ
হৃদয়-মাঝারে! অবলার ক্ষীণ বাহু
কী প্রচণ্ড সুখ হতে রেখেছিল মোরে
বাঁধিয়া বিবরমাঝে! উদ্দাম হৃদয়
অপ্রশস্ত অন্ধকার গভীরতা খুঁজে
ক্রমাগত যেতেছিল রসাতল-পানে।
মুক্তি, মুক্তি আজি! শৃঙ্খল বন্দীরে
ছেড়ে আপনি পলায়ে গেছে। এতদিন
এ জগতে কত যুদ্ধ, কত সন্ধি, কত
কীর্তি, কত রঙ্গ — কত কী চলিতেছিল
কর্মের প্রবাহ — আমি ছিনু অন্তঃপুরে
পড়ে, রুদ্ধদল চম্পককোরকমাঝে
সুপ্তকীটসম। কোথা ছিল লোকলাজ,
কোথা ছিল বীরপরাক্রম! কোথা ছিল
এ বিপুল বিশ্বতটভূমি! কোথা ছিল
হৃদয়ের তরঙ্গতর্জন! কে বলিবে
আজি মোরে দীন কাপুরুষ। কে বলিবে
অন্তঃপুরচারী! মৃদু গন্ধবহ আজি
জাগিয়া উঠিছে বেগে ঝঞ্ঝাবায়ুরূপে।
এ প্রবল হিংসা ভালো ক্ষুদ্র প্রেম চেয়ে,
প্রলয় তো বিধাতার চরম আনন্দ!
হিংসা এই হৃদয়ের বন্ধনমুক্তির