অধিক কহিতে কথা নাহিক সময়।
দ্বারে এল শত্রুদল আমারে করিতে
আক্রমণ। তাই আমি সৈন্য ভিক্ষা মাগি।
রেবতী। তোমারে করিয়া বন্দী অপরাধীভাবে
জালন্ধর-রাজকরে করিব অর্পণ।
মার্জনা করেন ভালো, নতুবা যেমন
বিধান করেন শাস্তি নিয়ো নতশিরে।
সুমিত্রা। ধিক পাপ! চুপ করো মাতা! নারী হয়ে
রাজকার্যে দিয়ো না দিয়ো না হাত। ঘোর
অমঙ্গলপাশে সবারে আনিবে টানি,
আপনি পড়িবে। হেথা হতে চলো ফিরে
দয়ামায়াহীন ওই সদাঘূর্ণমান
কর্মচক্র ছাড়ি। তুমি শুধু ভালোবাসো,
শুধু স্নেহ করো, দয়া করো, সেবা করো—
জননী হইয়া থাকো প্রাসাদ-মাঝারে।
যুদ্ধ দ্বন্দ্ব রাজ্যরক্ষা আমাদের কার্য
নহে।
কুমারসেন। কাল যায়, মহারাজ, কী আদেশ?
চন্দ্রসেন। বৎস তুমি অনভিজ্ঞ, মনে কর তাই
শুধু ইচ্ছামাত্রে সব কার্য সিদ্ধ হয়
চক্ষের নিমেষে। রাজকার্য মনে রেখো
সুকঠিন অতি। সহস্রের শুভাশুভ
কেমনে করিব স্থির মুহূর্তের মাঝে?
কুমারসেন। নির্দয় বিলম্ব তব পিতঃ! বিপদের
মুখে মোরে ফেলি অনায়াসে, স্থিরভাবে
বিচারমন্ত্রণা? প্রণাম, বিদায় হই।
চন্দ্রসেন। তোমার নিষ্ঠুর বাক্য শুনে দয়া হয়
কুমারের 'পরে— প্রাণে বাজে, ইচ্ছা করে
ডেকে নিয়ে বেঁধে তারে রাখি বক্ষোমাঝে,
স্নেহ দিয়ে দূর করি আঘাতবেদনা।
রেবতী। শিশু তুমি! মনে কর আঘাত না ক'রে