আর সখা — আর কেহ যদি থাকে সেথা —
যদি দেখা পাও আর কারো —
দেবদত্ত। জানি, জানি —
তাঁর কথা জাগিতেছে হৃদয়ে সতত।
এতক্ষণ বলি নাই কিছু। মুখে যেন
সরে না বচন। এখন তাঁহার কথা
বচনের অতীত হয়েছে। সাধ্বী তিনি,
তাই এত দুঃখ তাঁর। তাঁরে মনে ক'রে
মনে পড়ে পুণ্যবতী জানকীর কথা।
চলিলাম তবে।
বিক্রমদেব। বসন্ত না আসিতেই
আগে আসে দক্ষিণপবন, তার পরে
পল্লবে কুসুমে বনশ্রী প্রফুল্ল হয়ে
ওঠে। তোমারে হেরিয়া আশা হয় মনে,
আবার আসিবে ফিরে সেই পুরাতন
দিন মোর, নিয়ে তার সব সুখভার।
অরণ্য
প্রথম। হ্যা দেখ্, মাধু, কাল যে স্বপ্নটা দেখলুম তার কোনো মানে ভেবে পাচ্ছি নে। শহরে গিয়ে দৈবিজ্ঞি ঠাকুরের কাছে গুনিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
দ্বিতীয়। কী স্বপ্নটা বল্ তো শুনি।
প্রথম। যেন এক জন মহাপুরুষ ওই জল থেকে উঠে আমাকে তিনটে বড়ো বড়ো বেল দিতে এল। আমি দুটো দু-হাতে নিলুম, আর একটা কোথায় নেব ভাবনা পড়ে গেল।
দ্বিতীয়। দূর মূর্খ, তিনটেই চাদরে বেঁধে নিতে হয়।
প্রথম। আরে জেগে থাকলে তো সকলেরই বুদ্ধি জোগায় — সে সময়ে তুই কোথায় ছিলি? তার পর শোন্ না ; সেই বাকি বেলটা মাটিতে পড়েই গড়াতে আরম্ভ করলে, আমি তার পিছন পিছন ছুটলুম। হঠাৎ দেখি যুবরাজ অশথতলায় বসে আহ্নিক করছেন। বেলটা ধপ্ করে তাঁর কোলের উপর গিয়ে লাফিয়ে উঠল। আমার ঘুম ভেঙে গেল।
দ্বিতীয়। এটা আর বুঝতে পারলি নে? যুবরাজ শিগ্গির রাজা হবে।