প্রথম। আমিও তাই ঠাউরেছিলুম। কিন্তু আমি যে দুটো বেল পেলুম, আমার কী হবে?
দ্বিতীয়। তোর আবার হবে কী? তোর খেতে বেগুন বেশি করে ফলবে।
প্রথম। না ভাই, আমি ঠাউরে রেখেছি আমার দুই পুত্তুর-সন্তান হবে।
দ্বিতীয়। হ্যা দেখ্ ভাই, বললে পিত্তয় যাবি নে, কাল ভারি আশ্চর্য কাণ্ড হয়ে গেছে। ঐ জলের ধারে বসে রামচরণে আমাতে চিঁড়ে ভিজিয়ে খাচ্ছিলুম, তা আমি কথায় কথায় বললুম আমাদের দোবেজী গুনে বলেছে যুবরাজের ফাঁড়া প্রায় কেটে এসেছে। আর দেরি নেই। এবার শিগ্গির রাজা হবে। হঠাৎ মাথার উপর কে তিন বার বলে উঠল ‘ঠিক ঠিক ঠিক'। উপরে চেয়ে দেখি ডুমুরের ডালে এতবড়ো একটা টিকটিকি!
রামচরণের প্রবেশ
প্রথম। কী খবর রামচরণ?
রামচরণ। ওরে ভাই, আজ একটা ব্রাহ্মণ এই বনের আশেপাশে যুবরাজের সন্ধান নিয়ে ফিরছিল। আমাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কত কথাই জিজ্ঞেসা করলে। আমি তেমনি বোকা আর কি! আমিও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জবাব দিতে লাগলুম। অনেক খোঁজ করে শেষকালে চলে গেল। তাকে আমি চিত্তলের রাস্তা দেখিয়ে দিলুম। ব্রাহ্মণ না হলে তাকে আজ আর আমি আস্ত রাখতুম না।
দ্বিতীয়। কিন্তু তা হলে তো এ বন ছাড়তে হচ্ছে। বেটারা সন্ধান পেয়েছে দেখছি।
প্রথম। এইখানে বসে পড়ো-না ভাই রামচরণ — দুটো গল্প করা যাক।
রামচরণ। যুবরাজের সঙ্গে আমাদের মা-ঠাকরুন এই দিকে আসছেন। চল্ ভাই তফাতে গিয়ে বসি গে।
[ প্রস্থান
কুমারসেন। শংকর পড়েছে ধরা। রাজ্যের সংবাদ
নিতে গিয়েছিল বৃদ্ধ, গোপনে ধরিয়া
ছদ্মবেশ। শত্রুচর ধরেছে তাহারে।
নিয়ে গেছে জয়সেন-কাছে। শুনিয়াছি
চলিতেছে নিষ্ঠুর পীড়ন তার 'পরে —
তবু সে অটল। একটি কথাও তারা
পারে নাই মুখ হতে করিতে বাহির।
সুমিত্রা। হায় বৃদ্ধ প্রভুবৎসল! প্রাণাধিক
ভালোবাসো যারে সেই কুমারের কাজে
সঁপি দিলে তোমার কুমারগত প্রাণ।
কুমারসেন। এ সংসারে সব চেয়ে বন্ধু সে আমার,
আজন্মের সখা। আপনার প্রাণ দিয়ে