Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
শ্যামা - দ্বিতীয় দৃশ্য, ৫
শ্যামা
হে গরবিনী। –
ফাগুন যখন যাবে গো নিয়ে
ফুলের ডালা
কী দিয়ে তখন গাঁথিবে তোমার
বরণমালা।
বাজবে বাঁশি দূরের হাওয়ায়,
চোখের জলে শূন্যে চাওয়ায়
কাটবে প্রহর–
বাজবে বুকে বিদায়পথে চরণ-ফেলা দিনযামিনী,
হে গরবিনী।
শ্যামা। ধরা সে যে দেয় নাই, দেয় নাই,
যারে আমি আপনারে সঁপিতে চাই–
কোথা সে যে আছে সংগোপনে,
প্রতিদিন শত তুচ্ছের আড়ালে আড়ালে।
এসো মম সার্থক স্বপ্ন,
করো মোর যৌবন সুন্দর,
দক্ষিণবায়ু আনো পুষ্পবনে।
ঘুচাও বিষাদের কুহেলিকা,
নবপ্রাণমন্ত্রের আনো বাণী।
পিপাসিত জীবনের ক্ষুব্ধ আশা
আঁধারে আঁধারে খোঁজে ভাষা–
শূন্যে পথহারা পবনের ছন্দে,
ঝরে-পড়া বকুলের গন্ধে॥
সখীদের নৃত্যচর্চা, শেষে শ্যামার সজ্জা-সাধন, এমন সময়
বজ্রসেন ছুটে এল। পিছনে কোটাল
বজ্রসেন ছুটে এল। পিছনে কোটাল
কোটাল। ধর্ ধর্ ওই চোর, ওই চোর।
বজ্রসেন। নই আমি নই চোর, নই চোর, নই চোর–
অন্যায় অপবাদে আমারে ফেলো না ফাঁদে।
কোটাল। ওই বটে, ওই চোর, ওই চোর, ওই চোর।
[প্রস্থান