Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
চিত্রাঙ্গদা - ১১, ৩৭
চিত্রাঙ্গদা
আমি মোর পঞ্চ পুষ্পশরে, নিশীথের
নিদ্রাভেদ করি, ভোগবতী তটিনীর
তরঙ্গ-উচ্ছ্বাসে প্লাবিত করিয়া দিব
বাহুপাশে বদ্ধ দুটি প্রেমিকের তনু।
নিদ্রাভেদ করি, ভোগবতী তটিনীর
তরঙ্গ-উচ্ছ্বাসে প্লাবিত করিয়া দিব
বাহুপাশে বদ্ধ দুটি প্রেমিকের তনু।
১১
শেষ রাত্রি
অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদা
চিত্রাঙ্গদা। প্রভু, মিটিয়াছে সাধ? এই সুললিত
সুগঠিত নবনীকোমল সৌন্দর্যের
যত গন্ধ যত মধু ছিল সকলি কি
করিয়াছ পান। আর-কিছু বাকি আছে?
আর-কিছু চাও? আমার যা-কিছু ছিল
সব হয়ে গেছে শেষ? হয় নাই প্রভু!
ভালো হোক, মন্দ হোক, আরো কিছু বাকি
আছে, সে আজিকে দিব।
যত গন্ধ যত মধু ছিল সকলি কি
করিয়াছ পান। আর-কিছু বাকি আছে?
আর-কিছু চাও? আমার যা-কিছু ছিল
সব হয়ে গেছে শেষ? হয় নাই প্রভু!
ভালো হোক, মন্দ হোক, আরো কিছু বাকি
আছে, সে আজিকে দিব।
প্রিয়তম ভালো
লেগেছিল ব'লে করেছিনু নিবেদন
এ সৌন্দর্যপুষ্পরাশি চরণকমলে—
নন্দনকানন হতে তুলে নিয়ে এসে
বহু সাধনায়। যদি সাঙ্গ হল পূজা
তবে আজ্ঞা করো প্রভু, নির্মাল্যের ডালি
ফেলে দিই মন্দিরবাহিরে। এইবার
প্রসন্ন নয়নে চাও সেবিকার পানে।
যে ফুলে করেছি পূজা, নহি আমি কভু
সে ফুলের মতো, প্রভু, এত সুমধুর,
এত সুকোমল, এত সম্পূর্ণ সুন্দর।
দোষ আছে, গুণ আছে, পাপ আছে,পুণ্য
আছে; কত দৈন্য আছে; আছে আজন্মের
লেগেছিল ব'লে করেছিনু নিবেদন
এ সৌন্দর্যপুষ্পরাশি চরণকমলে—
নন্দনকানন হতে তুলে নিয়ে এসে
বহু সাধনায়। যদি সাঙ্গ হল পূজা
তবে আজ্ঞা করো প্রভু, নির্মাল্যের ডালি
ফেলে দিই মন্দিরবাহিরে। এইবার
প্রসন্ন নয়নে চাও সেবিকার পানে।
যে ফুলে করেছি পূজা, নহি আমি কভু
সে ফুলের মতো, প্রভু, এত সুমধুর,
এত সুকোমল, এত সম্পূর্ণ সুন্দর।
দোষ আছে, গুণ আছে, পাপ আছে,পুণ্য
আছে; কত দৈন্য আছে; আছে আজন্মের